নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯

পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে হিন্দু পুণ্যার্থী‌দের বহনকারী নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনায় মৃ‌তের সংখ্যা বে‌ড়ে দাঁড়ি‌য়ে‌ছে ৪৯ জনে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলার কর‌তোয়া ও আত্রাই নদীর বি‌ভিন্ন স্থান থে‌কে এসব মর‌দেহ উদ্ধার করা হয়। এখনও ৪০ জন যাত্রী নি‌খোঁজ র‌য়ে‌ছেন।

ঘটনার পর মা‌ড়েয়া ইউ‌নিয়ন প‌রিষ‌দে স্থা‌পিত জরুরি তথ্য ও সহায়তা কে‌ন্দ্রের দা‌য়িত্বরত কর্মকর্তা বোদা উপ‌জেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইমরানুজ্জামান এসব তথ্য নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন। 

আরও পড়ুন: ‘মা ফিরেছে লাশ হয়ে, বাবা তো ফিরলো না’

তিনি বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ নারী, ১৩ শিশু ও ১২ পুরুষসহ ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের তিনটি ইউনিট উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে। তবে বেশিরভাগ মরদেহ স্থানীয় ব্যক্তিরা উদ্ধার করছেন বলে জানান তিনি।   

এরআগে, দুপুর ২টা পর্যন্ত ২১ নারী, ১১ শিশু ও সাত পুরুষসহ ৩৯ জনের মর‌দেহ উদ্ধার করা হ‌য়। তাদের ম‌ধ্যে সাত জ‌নের মর‌দেহ ভে‌সে গি‌য়েছিল দিনাজপু‌রের আত্রাই নদী‌তে। সেখান থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হ‌য়ে‌ছে। পরে বিকালে আউলিয়ার ঘাট এলাকা থেকে আরও দুই লাশ উদ্ধার হয়। 

আরও পড়ুন: ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ যাত্রী ছিল নৌকায়, নদীর পাড়ে আহাজারি

এদিকে নিখোঁজদের মরদেহের অপেক্ষায় করতোয়ার পাড়ে অবস্থান নিয়েছেন স্বজনরা। অনেককে নৌকা নিয়ে নদীতে প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াতেও দেখা গেছে। কারও হাতে ছিল নিখোঁজ স্বজনের ছবি। কোনও মরদেহ উদ্ধারের খবর জানতে পারলেই নিখোঁজ স্বজনকে শনাক্ত করতে স্থানীয় মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে ছুটে যাচ্ছেন তারা। এছাড়া দিনভর ঘটনাস্থলে ছিল হাজার হাজার উৎসুক মানুষের উপস্থিতি। 

আরও পড়ুন: দেড় মাস আগে বিয়ে, করতোয়ায় বিচ্ছেদ

দুর্ঘটনা তদন্তে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় জানান, উদ্ধার মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। অনেকে নিজেদের স্বজনদের মরদেহ খুঁজে পাওয়ার পর আমাদের অবহিত করেছেন। মরদেহ সৎকারের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাথাপিছু ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। 

আরও পড়ুন: নৌকাডুবির দায় কার?

প্রসঙ্গত, রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। মহালয়া উপলক্ষে মাড়েয়া বাজার এলাকার আউলিয়া ঘাট থেকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে ৮০ জনের বেশি যাত্রী বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরে (নদীর অপর পাড়ে) যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে মাঝ নদীতে নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় কয়েকজন সাঁতরে তীরে ওঠেন। ঘটনাস্থলেই ১৭ জনের মৃত্যু হয়।