চিকিৎসকের মায়ের কাছে ট্রলি ফি দাবি, একসঙ্গে ১৬ কর্মচারীকে বদলি

চিকিৎসকের মায়ের কাছে ট্রলি ফি দাবি,রোগীদের হয়রানি ও জিম্মি করে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৬ কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের আন্দোলনের মুখে কর্মচারী সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দেওয়া নেতাসহ ওই ১৬ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে বদলি করা হয়।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুই দফায় এ বদলি সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরীফুল হাসান ১৬ কর্মচারীর বদলির আদেশ পাওয়ার বিষয়টি রাত সাড়ে ৯টায় বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রোগীদের জিম্মি করে রেখেছেন চতুর্থ শ্রেণির কয়েকজন কর্মচারী। রোগীরা জরুরি বিভাগে সরকারি ফি দিয়ে ভর্তি হলেও জনপ্রতি ৩০০ টাকা করে আদায় করছিলেন তারা। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে রোগীর স্বজনদের হয়রানি ও মারধর করা হয়।

পাশাপাশি হাসপাতালের ট্রলিতে রোগী নিয়ে যাওয়া বাবদ ২০০ টাকা, ওয়ার্ডে বিছানা বাবদ ২০০ টাকা দালালদের মাধ্যমে নিচ্ছিলেন কর্মচারী নেতারা। সেইসঙ্গে জোর করে রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করে কমিশন বাণিজ্য ও সরকারি ওষুধ চুরিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কর্মচারী নেতাদের বিরুদ্ধে। এমনকি রোগী মারা গেলে ট্রলিতে করে নিচে নামাতেও তাদের ৩০০ টাকা দিতে হয়।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর একই হাসপাতালের চিকিৎসক রাশেদুল আমিনের মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিলে ভর্তি ফি ২০০ ও ট্রলি ফি ২০০ টাকা দাবি করেন কর্মচারী নেতারা। এ ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর ওই চিকিৎসক হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে চুক্তিভিত্তিক তিন কর্মচারীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তবে চিকিৎসকের মায়ের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য চিকিৎসকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন চিকিৎসকরা। তারা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও তাদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।  ওই সময়ের মধ্যে ১৬ কর্মচারীকে বদলির আদেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আরও ৭৫ জনকে বদলির প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে হাসপাতালের পরিচালক ডা. ডা. শরীফুল হাসান বলেন, আপাতত ১৬ জনকে বদলির আদেশ এসেছে। আরও বদলির আদেশ আসবে। হাসপাতালে রোগীদের হয়রানির ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।