‘জিনের’ কয়েন দিয়ে হাতিয়ে নিলেন লাখ লাখ টাকা

‘জিনের’ কয়েন দিয়ে কোটি টাকার স্বর্ণের কয়েন পাইয়ে দেওয়ার নামে এক নারীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে মেহের আলী নামে এক কবিরাজকে গ্রেফতার করেছে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ। 

সোমবার (২১ নভেম্বর) ভোরে জেলা শহরের পৌর এলাকার চরুয়া পাড়া গ্রাম থেকে মেহের আলীকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এম আর সাঈদ। মেহের আলী কুড়িগ্রাম পৌর শহরের কৃষ্ণপুর চরুয়া পাড়া গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের বরাতে পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের এক নারী সন্তানের মা হতে না পারায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু চিকিৎসায় সুফল পাচ্ছিলেন না। এর মধ্যে মোবাইল ফোনে মেহেদি (মেহের আলী) নামে এক কবিরাজের সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই কবিরাজ জিনের মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে বলে ওই নারীকে জানায়। ওই নারী সরল বিশ্বাসে কবিরাজ মেহেদির কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে তাবিজ নিতে থাকেন। এর মধ্যে ওই নারীর বাড়িতে স্বর্ণের কয়েন আছে দাবি করে তা তুলে দেওয়ার কথা বলে মেহেদি ওরফে মেহের আলী। একপর্যায়ে ওই নারীকে একটি পুরাতন সোনালি রঙের কয়েন দেয়। এটি ‘জিনের’ কয়েন দাবি করে তা গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজের পর মোমবাতি জ্বালিয়ে দেখতে বলে। ওই কয়েন থেকে কোটি টাকার স্বর্ণ মুদ্রা পাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ১২ লাখ টাকা দাবি করে এবং বিভিন্ন সময়ে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় মেহের আলী। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সন্তান না হওয়ায় এবং কোনও স্বর্ণের কয়েন না পাওয়ায় ভুক্তভোগী নারী তার বোনের সহায়তায় পুলিশের দ্বারস্থ হন। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে অভিযুক্ত মেহের আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় মেহের আলীর কাছ থেকে কয়েন, তাবিজ ও হরিণের চামড়ার টুকরো উদ্ধার করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এম আর সাঈদ বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারীর ভাই বাদী হয়ে মামলা করলে গত ২০ নভেম্বর মেহের আলীকে গ্রফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ভুক্তভোগীর কাছে দুই লাখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। তবে বাদী পক্ষের দাবি সে আরও অনেক বেশি টাকা নিয়েছে।’

তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আসামিকে অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্তের আবেদন করা হয়েছে। মঙ্গলবার আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’