জারিফ পেলো জিপিএ-৫, বাবা বেঁচে থাকলে সবচেয়ে খুশি হতেন

নীলফামারী সদরের গোড়গ্রাম ইউনিয়নের মাঝাপাড়া গ্রামে বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া আব্দুল্লাহ মোক্তাদির জারিফ পেয়েছে জিপিএ-৫। সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফল প্রকাশের পর এ তথ্য জানা যায়। 

জারিফ নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। সে ওই ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামের মৃত মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ভোররাতে জারিফের বাবা কিডনিজনিত রোগে মারা যান। ওই দিন তার বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা ছিল। একদিকে স্বজনরা নিয়েছিলেন লাশ দাফনের প্রস্তুতি, অন্যদিকে সেদিন পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছিল জারিফকে। তবে বাবার মৃত্যুতে তাকে ভেঙে পড়তে দেয়নি সহপাঠী আর শিক্ষকরা। পরীক্ষা শেষ করে বাবার লাশ দাফন করে জারিফ। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা প্রশাসনের নজরে আসে।

এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর জারিফের বাড়িতে যান জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। এ সময় ভবিষ্যতে তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

জারিফের মা জোলেখা খাতুন বলেন, ‌‘আমার ছেলে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। অনেক খুশি হয়েছি। স্বামীকে হারিয়ে চোখেমুখে অন্ধকার দেখছি। আজ তার বাবা বেঁচে থাকলে সবচেয়ে খুশি হতেন। আল্লাহ যেন আমার জারিফকে আলোকিত মানুষ করে— সবাই দোয়া করবেন।’

গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য (মেম্বার) অলিয়ার রহমান বলেন, ‘জারিফ আর আমার ছেলে আরাফাত একে-অপরের বন্ধু। দুজনের মধ্যে জারিফ লেখাপড়ায় অনেক ভালো। দোয়া করি, ছেলেটা অনেক বড় হোক।’ 

নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘জারিফের ফল দেখে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সবাই আনন্দিত এবং গর্বিত। আমি তার সফলতা কামনা করছি।’

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ‘জারিফ মেধাবী ছাত্র। সে ভবিষ্যতে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবে। যেকোনো সহযোগিতায় আমি তার পাশে থাকবো।’