সেই পিআইওর বিরুদ্ধে আবারও বিভাগীয় মামলা

ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে আলোচিত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে আবারও বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। এবার তিন দিনের ছুটি নিয়ে ১৩ দিন অফিস না আসার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে অধিদফতর। 

নুরুন্নবী সরকার নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় কর্মরত। গত বছরের ১৭ অক্টোবর অধিদফতরের আদেশে বাগাতিপাড়ায় যোগদান করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের উপ-প্রকল্প পরিচালক (মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প) আব্দুল কুদ্দুস বুলবুল।

তিনি বলেন, ‘নুরুন্নবী ব্যক্তিগত কারণে গত ৩১ জুলাই তিন দিনের ছুটির আবেদন করে কর্মস্থল ছাড়েন। ছুটি শেষে গত ৩ আগস্ট তার যথারীতি অফিস করার কথা। কিন্তু ১৬ আগস্ট পর্যন্ত তিনি অফিসে অনুপস্থিত থাকেন। অনুমতি ছাড়া নুরুন্নবীর অনুপস্থিতির বিষয়টি লিখিতভাবে অধিদফতরকে জানায় বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রশাসন। নুরুন্নবীর এমন আচরণ অসদচারণের সামিল। এ কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে অধিদফতর। মামলাটি তদন্তের জন্য তাকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয় অধিদফতর। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত নুরুন্নবীর শুনানি গ্রহণ করেছি। শিগগিরই এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

এর আগেও আর্থিক দুর্নীতি, আদেশ অমান্য ও আসদচারণের দায়ে নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় দুটি মামলা করে অধিদফতর। একটি মামলায় লঘুদণ্ড হিসেবে তার বেতন গ্রেড নিম্নতর ধাপ পদাবনতি এবং অপর মামলায় দুটি বার্ষিক বর্ধিত বেতন দুই বছরের জন্য স্থগিত করে অধিদফতর। একই সঙ্গে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল অধিদফতর। শুধু তাই নয়, সুন্দরগঞ্জে টানা পাঁচ বছরের চাকরিতে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদকের তিনটিসহ মোট পাঁচটি মামলা হয় সুন্দরগঞ্জ থানায়।

এদিকে, সুন্দরগঞ্জ থেকে বদলি ও সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুন্নবী মানহানির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর রংপুর আদালতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। এই মামলার চার্জ শুনানির দিনে গত ২ আগস্ট রংপুর আদালতের বারান্দায় বিবাদী সাংবাদিক জিল্লুর রহমান পলাশসহ গাইবান্ধার পাঁচ সাংবাদিককে আঙুল উঁচিয়ে গালাগালি ও হুমকি দেন নুরুন্নবী।

উল্লেখ্য, পিআইও নুরুন্নবীর দুর্নীতি কর্মকাণ্ড নিয়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে একাধিক প্রতিবেদন প্রচার হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। পরে সুন্দরগঞ্জ থেকে তাকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে বদলির আদেশ দেয় অধিদফতর। কিন্তু সেই বদলি ঠেকাতে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েও ব্যর্থ হন তিনি। এরপর তাকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় বদলি করা হয়। সেখানেও অফিস ফাঁকিসহ অনিয়মে জড়িয়ে পড়লে তাকে বান্দরবান সদর উপজেলায় বদলি করে অধিদফতর। কিন্তু ২০২১ সালের ৩১ মে পর্যন্ত যোগদান না করায় তাকে প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করাসহ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।