সংঘর্ষ থেকে বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে নিহত

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে লাগা সংঘর্ষে বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চার জন। 

রবিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে বীরগঞ্জ উপজেলার ৮নং ভোগনগর ইউনিয়নের দিস্তাপড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত এইচএসসি পরীক্ষার্থীর নাম আঁখি আকতার (২০)। তিনি উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের দিস্তাপড়া গ্রামের আকতারুল ইসলামের মেয়ে। তিনি এবার বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ সরকারি কলেজ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ জনকে আটক করেছে। আটকরা হলেন- রশিদা বেগম, সাবিনা আকতার, শাকিল হোসেন, মিস্টার ও রুবেল। তাদেরকে বীরগঞ্জ থানা হাজতে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আকতারুল ইসলাম, রিয়াজুল ইসলাম ও তাদের খালাত বোন রোকেয়া বেগমের সাত শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। রবিবার দুপুরে সেই জমির দখল নিতে যান রোকেয়া বেগম। এ সময় অপরপক্ষের লোকজন বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন আঁখি আক্তার। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আঁখির।

নিহতের খালাতো ভাই জাহিদ হাসান জানান, ওই জমিতে রবিবার দুপুরে রিয়াজুল ইসলাম মামলা চলা অবস্থায় ঘর তুলতে যায়। এ সময় রোকেয়া বেগমের লোকজন গিয়ে বাধা দেয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে আঁখির বাবা আকতারুল ইসলাম আহত হন। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফিরেই বাবা আহত হওয়ার খবর শুনে দৌড়ে ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় প্রতিপক্ষরা পেছন দিক থেকে তার মাথায় আঘাত করে।

তিনি আরও জানান, এতে তিনি গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আকতারুল ইসলাম ও শামিউল ইসলাম নামে দুজন আহত হয়ে দিনাজপুরের এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
 
বীরগঞ্জ থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।