জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা

পরের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিয়ে আগের পত্রের পরীক্ষা শুরু

কুড়িগ্রামের মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের (বিষয় কোড: ২২১৬০১) স্থলে আগামী ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় পত্রের (বিষয় কোড: ২২১৬০৩) প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা শুরুর ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) দুপুরে মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। পরীক্ষা শুরুর পর বিষয়টি বুঝতে পেরে পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নপত্র তুলে নিয়ে পুনরায় সঠিক প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। একাধিক পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

তবে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সালামের দাবি, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। কিছু প্রশ্নপত্র ঘাটতি থাকায় ওই বিষয়ের পরীক্ষা দেরিতে শুরু হয়েছে।’

মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকটি বিষয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। বেলা সাড়ে ১২টায় পরীক্ষা শুরু হয়। তবে প্রশ্নপত্র বিভ্রাটের ঘটনায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের পরীক্ষা দেরিতে শুরু করে অতিরিক্ত সময় দিয়ে বিকাল ৫টায় পরীক্ষা শেষ হয়।

মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আজ ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের প্রশ্নপত্রের জায়গায় একই বিষয়ের আগামী ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় পত্রের প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে পাঠানো হয়েছিল। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে আবার ট্রেজারি থেকে সঠিক প্রশ্নপত্র নিয়ে এসে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।’ তবে প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেননি এই শিক্ষক।

আরেক শিক্ষক বলেন, ‘যে শিক্ষকরা ট্রেজারি থেকে প্রশ্ন নিয়ে এসেছেন তারা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। বিষয় কোড অনুযায়ী প্রশ্নপত্র এনে অধ্যক্ষের সামনে বিষয় কোড মিলিয়ে প্রশ্নপত্র খোলার নিয়ম। কিন্তু কোড না মিলিয়ে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে তা কক্ষে কক্ষে পাঠানো হয়েছিল। পরে আবারও ট্রেজারি থেকে সঠিক প্রশ্নপত্র নিয়ে এসে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।’

ওই কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষার্থীদের প্রথমে প্রশ্নপত্র দিয়ে পরে তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রায় ২৫-৩০ মিনিট পর আবার পরীক্ষা শুরু হয়েছে।’

বিকাল ৫টায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানান, তাদের হাতে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়নি। তবে প্রতিটি কক্ষে পরের দিনের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছিল।

শাহীনুর আলম নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‌‘কক্ষে প্রশ্নপত্র আনার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক আমাদের বিষয় কোড জিজ্ঞাসা করেন। কক্ষে আসা প্রশ্নপত্রের বিষয় কোডের সঙ্গে আমাদের আজকের বিষয় কোড না মেলায় ওই শিক্ষক বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে ৩০ মিনিট পরে আমাদেরকে সঠিক প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়।’

‘এটা অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা। তাদের খামখেয়ালির জন্য আমাদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হলো। এসব বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল’ বলেন এই পরীক্ষার্থী।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। একবার প্রশ্নপত্রের খাম খুললে তা আর বন্ধ করার উপায় নেই। আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তার প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’