মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখলেন চেয়ারম্যান-মেম্বাররা

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মতামত এবং যাচাই-বাছাই ছাড়াই দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ভিজিডি কর্মসূচির দুই হাজার ৬৫৯ জনের তালিকা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগে এবং তালিকা সংশোধনের দাবিতে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিরঞ্জন কুমারকে অবরুদ্ধ করেন তারা। পরে সন্ধ্যা ৬টায় তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। এই বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিংয়ে বসবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খানসামা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ৫৪টি ওয়ার্ডে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দুস্থ ভিজিডি কার্যক্রমের আওতায় দুই হাজার ৬৫৯ জন দুস্থ নারী সুবিধা পাবেন।

চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দাবি, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন ভিডব্লিউবি (ভিজিডি) কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে উপজেলা কমিটিতে পাঠাবে। সেটি পরে উপজেলা কমিটি যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেবে। অটোমেশনের কথা বলে একটি তালিকা অনুমোদন দেয়। এরই প্রতিবাদে ভিডব্লিউবি কার্যক্রমের আওতায় ভিজিডি কর্মসূচির তালিকা পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান ছয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। একপর্যায়ে তারা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান ফোরাম কমিটির সভাপতি ও আংগারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা শাহ জানান, যাচাই-বাছাই করে সঠিক দুস্থ ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করার জন্য উপজেলা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও সেটি বাদ দিয়ে পছন্দমতো তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারিতা ও নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম। তাই এই তালিকা পরিবর্তন করার দাবি জানানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিরঞ্জন কুমারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশিদা আক্তার বলেন, এখন সব তালিকা হয় অনলাইনে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ আবেদন করেন। পরে সেই তালিকাগুলো যাচাই-বাছাই করে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করতে হয়- যাতে করে প্রকৃত মানুষরাই এই সুবিধা ভোগ করতে পারেন। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংশোধন করে আমাদের তালিকা না দেওয়ায় অটোমেশন পদ্ধতিতে তালিকা প্রস্তুত হয়ে গেছে। এখন চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা চাচ্ছেন- তাদের দেওয়া তালিকা অনুমোদন করতে। এটি করার আমাদের সুযোগ রয়েছে, কিন্তু বেশ কিছু নিয়মের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাদের তালিকা অনুমোদনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।