উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে জুয়ার অ্যাপস তৈরি, গ্রেফতার ৩

অনলাইনে জুয়ার মাধ্যমে তরুণদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এই চক্রের ‘মূল হোতা’সহ তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ। বুধবার (৮ মার্চ) কুড়িগ্রাম, রংপুর ও দিনাজপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে জলা পুলিশ লাইন্সের ফোর্সেস মেস সম্মেলনকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম।

গ্রেফতার যুবকরা হলেন- চক্রের ‘মূলহোতা ও অ্যাপস ডেভেলপার’ মো. সুজন মিয়া (২৪), আবুল কালাম (২২) ও ভবানী রায়। এদের মধ্যে সুজন মিয়ার বাড়ি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে। অপর দুজন চক্রটির এজেন্ট বলে দাবি করছে পুলিশ। অনলাইন মনিটরিংয়ের মাধ্যমে তাদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, সংঘবদ্ধ এই জুয়ার চক্রটি কয়েকটি জুয়ার অ্যাপস তৈরি করে তরুণদের অনলাইন প্লাটফর্মে জুয়া খেলায় উদ্বুদ্ধ করে আসছে। মূলত বিভিন্ন খেলাধুলা নিয়ে বাজি ধরার মাধ্যমে এই জুয়া চলছিল। চক্রটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উঠতি বয়সী শত শত তরুণের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ জুয়া চক্রের এজেন্ট আবুল কালামের অবস্থান চিহ্নিত করে। পরে রংপুর শহরের সেনপাড়ার মুলাটোল প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ছাত্রাবাস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে অনলাইন জুয়ার বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আবুল কালামের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থেকে মূলহোতা সুজন মিয়াকে ল্যাপটপ ও অন্যান্য সরঞ্জামসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। উভয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের একটি দল দিনাজপুরের খানসামা এলাকা থেকে অপর এজেন্ট ভবানী রায়কে গ্রেফতার করা হয়। পরে আজ বিকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, চক্রটির মূল হোতা সুজন মিয়া। সে উচ্চ মাধ্যমিক পাস হলেও ইউটিউব ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে জুয়ার অ্যাপস তৈরি করা শিখেছে। এই অ্যাপসের মাধ্যমে সে জুয়ার চক্র তৈরি করে উঠতি তরুণদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে। তাদের কাছে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরবঙ্গে চক্রটির সক্রিয় সদস্যদের চিহ্নিত করে শিগগির তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।