মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডি

দুই দিনের ব্যবধানে আবারও সভাপতি পরিবর্তন

দুই দিনের ব্যবধানে কুড়িগ্রাম শহরের মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে আবারও পরিবর্তন আনা হয়েছে। গত ১৫ মার্চ এক অফিস আদেশে জেলা ছাত্রলীগ সভপতি রাজু আহমেদকে গভর্নিং বডির সভাপতি করা হলেও দুই দিনের মাথায় তাকে পরিবর্তন করা হয়।

তার স্থলে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসককে গভর্নিং বডির নতুন সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। গত ১৮ মার্চ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত পত্রে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ১৫ মার্চ সনদ জালিয়াতির অভিযোগে সিরাজুল ইসলাম টুকুকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাজু আহমেদকে গভর্নিং বডির সভাপতি করা হয়। তবে ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ায় গভর্নিং বডির সভাপতি পদের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে দুই দিনের মাথায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে রাজু আহমেদ বলেন, ‘আমি এখনও ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছি। গভর্নিং বডির সভাপতির মতো গুরু দায়িত্ব পালনের সময় আসেনি। যতদিন প্রাণপ্রিয় সংগঠন ছাত্রলীগের দায়িত্বে আছি, ততদিন অন্য কোনও দায়িত্ব নিতে চাই না। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাক্রমে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছি।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। সরকারি কর্মচারী হিসেবে সরকারের দেওয়া যেকোনো দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করবো।’

গত বছরের মে মাসে মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের দুই বছর মেয়াদি গভর্নিং বডি গঠিত হয়। এতে সভাপতি নির্বাচিত হন সিরাজুল ইসলাম টুকু। এরপরই তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সিরাজুল ইসলাম টুকুর বিরুদ্ধে ডিগ্রি পাসের ভুয়া সনদ দাখিল করে গভর্নিং বডির সভাপতি পদে মনোনয়ন নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তিনি ১৯৭৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে বি.কম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেন। কিন্তু বিএসসি পাশের জাল সনদ দিয়ে গভর্নিং বডির সভাপতি হন। 

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের সনদ যাচাইয়ের আবেদনে টুকুর এই জালিয়াতি ধরা পড়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টুকুর বিএসসি পাসের সনদটি জাল বলে নিশ্চিত করে। জাল সনদ দিয়ে টুকুর গভর্নিং বডির সভাপতি হওয়ার খবর প্রকাশিত হলে কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় টুকুকে সরিয়ে দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পরে রাজু আহমেদকে সভাপতি করলেও দুই দিনের মাথায় পরিবর্তন করে জেলা প্রশাসককে সভাপতি করা হয়।