মাটিতে পাওয়া মর্টারশেলকে গুপ্তধন ভেবে গোপনে খুলতে গিয়ে বিস্ফোরণে গেলো পা

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় পুকুর খুঁড়তে গিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া পরিত্যক্ত মর্টারশেল বিস্ফোরণে হামিদুল ইসলাম বাবু (৩২) নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হামিদুলের ডান পায়ের গোড়ালি খসে পড়েছে বলে জানা গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোর্শেদুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিস্ফোরণে আহত হামিদুল ইসলাম বাবু দেওয়ানের খামার গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় মিস্ত্রি বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, গত তিন চার দিন আগে আহতের মামা আব্দুল গফুর নিজ জমিতে পুকুর কাটার সময় মাটির নিচে পরিত্যক্ত অবস্থায় মর্টার শেলটি পান। গুপ্তধন ভেবে তিনি তা বাড়িতে নেন এবং বিষয়টি গোপন রাখেন। ভাগ্নে বাবু পেশায় লেদ মিস্ত্রি হওয়ায় মর্টারশেলটি তাকে খোলার দায়িত্ব দেন গফুর। মঙ্গলবার রাতে বাবু একই গ্রামে নিজ বাড়ির রান্নাঘরে মর্টারশেলটি খোলার চেষ্টা করলে আঘাতে এটি বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের আঘাতে বাবুর ডান পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বাঁ পা ঝলসে যায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোর্শেদুল হাসান জানান, মর্টারশেলটি বিস্ফোরণে রান্নাঘরের টিনের বেড়াসহ স্থানীয় একটি বাউন্ডারি দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রান্নাঘরের মেঝেতে হাতুড়ি, কুড়াল ও দা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সম্ভবত গুপ্তধনভেবে মর্টারশেলটি খুলতে চেষ্টা করায় আঘাতে এটি বিস্ফোরিত হয়েছে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের বরাতে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মর্টারশেলটি মুক্তিযুদ্ধকালের। এটি অবিস্ফোরিত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় মাটির নিচে ছিল। তবে এটি তাজা থাকায় আঘাতে বিস্ফোরিত হয়েছে। এ ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।’