আগুনে পুড়েছে বসতভিটা-বইপত্র, এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় লিমা

কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার কাঠমিস্ত্রি হোসেন আলীর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে তার তিনটি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পুড়ে গেছে ঘরে থাকা বইপত্র, ধান-চাল ও গরু-ছাগলসহ সবকিছু। তবে বইপত্র পুড়ে যাওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন হোসেন আলীর মেয়ে লিমা।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বকসিপাড়া গ্রামে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

তবে ততক্ষণে পুড়ে যায় হোসেন আলীর বাড়ির তিনটি ঘর, মারা গেছে তিনটি গুরু, তিনটি ছাগলসহ হাঁস-মুরগি। এ ছাড়া ঘরের ধান-চাল, সন্তানের বইখাতা ও আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। শনিবার বিকাল পর্যন্ত তাদের পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। 

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে হঠাৎ ঘরে আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরিবার ও প্রতিবেশী পুরুষরা নামাজে থাকায় বাড়ির নারী সদস্যরা নিরুপায় হয়ে পড়েন। তাদের চিৎকারে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে বাড়িঘরসহ সবকিছু পুড়ে যাওয়ায় শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েন হোসেন আলী।

হোসেন আলীর এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে লাবনী আক্তার লিমা বলেন, ‘আমাদের কিছুই নেই। নিঃস্ব হয়ে গেছি। গরু-ছাগল, ধান, হাঁস-মুরগি সব পুড়ে গেছে। আমার ও ছোট ভাইয়ের পড়ার বইগুলো সব পুড়ে গেছে। জীবন বাঁচাতে শুধু পরনের কাপড়সহ ঘর থেকে বের হয়েছি। কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। আগামী ৭ জুন আমার এইচএসসি পরীক্ষা। কীভাবে পরীক্ষা দেবো বুঝতেছি না। আপনারা আমাদের সহায়তা করুন। আমরা কোথায় থাকবো, কী খাবো, কোনও উপায় নেই। এখনও কেউ আমাদের খোঁজও নেয়নি।’

খবর পেয়ে শনিবার বিকালে পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম ভুক্তভোগী পরিবারকে তাৎক্ষণিক আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে মেয়র বলেন, ‘ওই পরিবার আমার কাছে লিখিত আবেদন করলে তাদের সহায়তা করা হবে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সইদুল আরীফ বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত আবেদন দিলে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।’