পাথরের আড়ালে ভারতীয় কাপড়: ৩ ট্রাকের চালকদের খোঁজ মিলছে না

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথরের আড়ালে অবৈধভাবে ভারত থেকে আনা কাপড়সহ তিনটি ট্রাক আটক করা হয়েছে। তবে ট্রাকগুলোর চালকদের খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

বুধবার (২৯ মার্চ) ভারতীয় ট্রাক তিনটি রংপুরে কাস্টমসে জমা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ৬১-বিজিবি ব্যাটালিয়নের বুড়িমারী স্থলবন্দর কোম্পানি কমান্ডার মো. বাইরোন আলী।

বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৭ মার্চ) দিবাগত রাতে স্থলবন্দরের কলাবাগান ও বুড়িমারী বাসস্ট্যান্ড থেকে এসব পণ্য জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রংপুর ৬১-বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এম মাহবুবুল আলম খান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বুড়িমারী বাসস্ট্যান্ড থেকে মালিকবিহীন অবস্থায় একটি ভারতীয় ট্রাক জব্দ করা হয়। এরপর ওই রাতেই বুড়িমারী কলাবাগান এলাকা থেকে মালিকবিহীন অবস্থায় আরও দুটি ভারতীয় ট্রাক জব্দ করা হয়। তিনটি ট্রাকে তল্লাশি করে ভারতীয় শাড়ি, থ্রি পিস, চশমা এবং কেমিক্যাল পাওয়া যায়।

আটক ট্রাক তিনটির নম্বর হলো, ডব্লিউবি-৮৫-৪৮৭৭, ডব্লিউবি৬১এ-০৪৯৭ এবং ডব্লিউবি-৫৯-৭৩৭৮। এই ট্রাক তিনটির চালকরা হলেন যথাক্রমে বিপুল রায়, মো. মিঠুন ও মো. মজহার আলী।

গাড়ির চালকদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিস্তা-২ বিজিবি-৬১ ব্যাটালিয়নের বুড়িমারী স্থলবন্দর কোম্পানী কমান্ডার মো. বাইরোন আলী বলেন, ‘আমরা চালকদের পাইনি। তাদের খুঁজে পেলে জানানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া বুধবার সকালে ভারতীয় ট্রাক তিনট্রিও কাস্টমসে জমা দেওয়ার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আরফান ট্রেডার্সের প্রোপাইটর মো. আশরাফুল আলমের বলেন, ‘আমার আমদানি করা পাথর নিয়ে আসা গাড়ির চালক মো. মিঠুন বুড়িমারীতেই আছে। তিনি বিজিবি বা কাস্টমসের লোকজনের সামনে যেতে ভয় পাচ্ছেন। আমরা বুঝতে পারছি না যে, এখন বিষয়টিতে কোথায়, কী করতে হবে?’

পাথর নিয়ে আসা গাড়িটি কলাবাগান এলাকায় আনলোড অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিল উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, ‘ওই গাড়িতে কোনও কিছুই পাওয়া যায়নি। এরপরও কেন গাড়িটি আটকে রাখা হয়েছে, তা জানি না। সকল বিষয়ে ভারতীয় রফতানিকারক মেসার্স হাসিবুল এমডির প্রোপাইটর হাসিবুল ইসলামকে জানানো হয়েছে।’

এদিকে এ বিষয়ে ইতোমধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে জরুরি সভা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমসের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. বিল্লাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এ স্থলবন্দর সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সভায় এ বিষয়ে সকলে একমত হয়েছেন। আমরা আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় আরও কঠোরভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কার্যক্রম পরিচালনা করবো।’

তিনি আরও জানান, তিনটি আমদানি কারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাথর আমদানি করা হয়েছে। ওই গাড়িগুলোতে পাথরের ভেতরে কীভাবে কাপড় নিয়ে আসা হয়েছে, তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আমরাও অভ্যন্তরীণ খোঁজখবর নিচ্ছি।

তবে ট্রাক চালকদের অবস্থান এখন কোথায়— তা জানাতে পারেননি মো. বিল্লাল হোসেন। ‘বিষয়টি গুরুত্বে সঙ্গে দেখা হচ্ছে’ বলেও জানান তিনি।