ফোনালাপ ফাঁসের পর বিক্ষোভের মুখে প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৬ জুন) ভোরে আব্দুর রাজ্জাক নামে ওই বিদ্যালয়ের সেই প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় ভুক্তভোগীর বাবা মামলা করেছেন।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানান, চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে আপত্তিকর কথা বলেন। তিন মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ফোনালাপ ফাঁস হয়। সেখানে ওই ছাত্রীকে নানান কুপ্রস্তাব দিয়ে কাউকে বলতে মানা করেন।

স্বজনরা জানান, বুধবার ওই শিক্ষক কল করেন। মোবাইলে কল রেকর্ডার থাকায় সব রেকর্ড হয়ে যায়। ফোনালাপ শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান তারা। বিষয়টি জানাজানি হলে আশপাশের লোকজনের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাড়ু মিছিল নিয়ে বিদ্যালয়ে যান। এরপর তারা প্রধান শিক্ষকেরটিসহ বিদ্যালয়ের সব কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত পেছন দিয়ে পালিয়ে যান। বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী তার গ্রেফতার ও অপসারণ দাবিতে বিদ্যালয়ের সামনে মধ্যরাত পর্যন্ত অবস্থান করেন।

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবারের সদস্য তাপস চন্দ্র রায় বলেন, প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণ ও কার্যকলাপে বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ নানান কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে অপকর্ম চালিয়ে আসছেন।

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, বারবার এসব ঘটনার কারণে স্কুলের সুনাম অনেক ক্ষুণ্ন হয়েছে। পরেরবার আমরা ছাত্রছাত্রী ভর্তি করাতে পারবো কি না সন্দেহ আছে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকলে কেউই তাদের মেয়ে এই বিদ্যালয়ে পাঠাতে চাইবেন না।

এদিকে, বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাশপিয়া তাশরিন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম শহিদুল ইসলাম ও বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান। তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার আশ্বাস দিলেও এলাকাবাসী বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন। ভুক্তভোগীর বাবা গভীর রাতে আব্দুর রাজ্জাককে আসামি করে মামলা করলে আজ ভোরে তাকে গ্রেফতার করেন।

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার মোবাইল ফোনটি পরীক্ষা করা হচ্ছে।

অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, যা হচ্ছে সবই ষড়যন্ত্রমূলক। তাকে হেনস্তা করার জন্যই এটি করা হচ্ছে।