কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের মানুষের জন্য ৮৬টি গরু কোরবানি দেওয়া হচ্ছে

কোরবানির ঈদ এলেই কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের মানুষদের গরুর মাংস খেতে না পাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। প্রতিবছর স্থানীয় প্রশাসন, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে এসব হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কোরবানির আয়োজন করা হয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে জেলার চরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য ৮৬টি গরু কোরবানির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর চরাঞ্চলে বসবাসকারী সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এককভাবে দুটি গরু দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করে আরও ৮৪টি সহ মোট ৮৬টি গরু কোরবানির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্যোগে জেলার চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় গরু কোরবানি ও মাংস বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘সম্প্রতি নদ-নদীর পানি বেড়ে জেলার চরাঞ্চলের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। চরবাসীর দাবি ছিল তাদের জন্য কোরবানির মাংসের ব্যবস্থা করার। বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসকের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। তিনি চরের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাংস খাওয়ার ইচ্ছাকে উপলব্ধি করে একটি গরুর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমরা এটি কোরবানি করে সদরের যাত্রাপুরের পোড়ার চরের পরিবারগুলোর মাঝে বিতরণ করবো। ওই চরের মানুষগুলো তাদের সন্তান ও পরিবার পরিজন নিয়ে একবেলা হলেও মাংস খেতে পারবেন। এ জন্য আমি জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই।’

এদিকে জেলার সদর, উলিপুর ও রৌমারীসহ বিভিন্ন উপজেলার চরাঞ্চলে কোরবানির আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি। জেলার বাইরের কয়েকজন ব্যক্তির উদ্যোগে উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুরে গরু কোরবানি করে ৭০টি পরিবারের মাঝে মাংস বিতরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই ব্যক্তিদের উদ্যোগে সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের কদমতলা এলাকায় ধরলা তীরবর্তী সুবিধাবঞ্চিত ৮০টি পরিবারের মাঝেও মাংস বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে। মাংসের সঙ্গে পরিবারগুলোকে পোলাও চাল, তেল, লবণ ও মসলাও দেবেন উদ্যোক্তারা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের একক উদ্যোগে সদর ও নাগেশ্বরী উপজেলার চরাঞ্চলে দুটি গরু কোরবানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও কয়েকটি সংগঠন ও সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন এলাকায় গরু কোরবানি করে মাংস বিতরণ করা হবে। উলিপুর ও চর রাজিবপুর উপজেলায় এই সংখ্যা বেশি। ৮৬টি গরু কোরবা‌নি ছাড়াও ৫৪০ প‌রিবার‌কে আলাদাভা‌বে প‌্যা‌কেট মাংস ও রান্না করা মাংস দেওয়া হ‌বে।’