সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের মিনি গ্রিডে আগুন, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ৪২০ পরিবার

কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নে ৩৫০ কিলোওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের মিনি গ্রিডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ওই প্রকল্পের বিদ্যুৎ উৎপাদন। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে ৪২০টি পরিবার। 

রবিবার (৯ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চর সাজাই গ্রামের কানেশিয়া সোলার মিনি গ্রিড প্রকল্পে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা নিশ্চিত করতে পারেনি গ্রিড কর্তৃপক্ষ।

ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও প্রকল্প এলাকাটি ব্রহ্মপুত্র ও সোনাভরি নদীবেষ্টিত দ্বীপচর হওয়ায় আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। সবকিছু পুড়ে ছাই হওয়ার পর ধীরে ধীরে আগুন নিভে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।

কানেশিয়া সোলার মিনি গ্রিড প্রকল্পটি ৩৫০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। ২০১৮ সালে ইডকলের অর্থায়নে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি চালু করা হয়। এক্সিলোন বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানি প্রকল্পটি পরিচালনা করে আসছে। হাইব্রিড সিস্টেম এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দিনে ও রাতে ৪২০টি পরিবারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, সকাল ৮টার দিকে প্রকল্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখে স্থানীয়রা প্রকল্প এলাকায় ছুটে যান। কিন্তু ব্যাটারির বিস্ফোরণ ও এসিডের ভয়ে কেউ আগুন নেভাতে কাছে যাওয়ার সাহস পায়নি। অগ্নিকাণ্ডে ভবনে থাকা ব্যাটারি, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও বৈদ্যুতিক তার পুড়ে যায়। নদীবেষ্টিত দুর্গম এলাকা হওয়ায় ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। পরে স্থানীয়রা পানি নিক্ষেপের চেষ্টা করলেও সব পুড়ে যাওয়ার পর আগুন নিভে যায়।

গ্রিডের টেকনিশিয়ান জাহিদ হাসান বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শর্টসার্কিট হওয়ার মতো কোনও অবস্থা ছিল না। ফলে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জাহিদ হাসান বলেন, ‘গ্রিডে থাকা ২৮৮টি ব্যাটারি পুড়ে গেছে। এ ছাড়া ২৭টি ইনভার্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনে থাকা বৈদ্যুতিক ক্যাবলসহ আরও কিছু সরঞ্জাম পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রকল্প এলাকায় থাকা সোলার প্যানেলগুলো অক্ষত রয়েছে।’

রাজিবপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সাব-অফিসার আবু হানিফ বলেন, ‘ঘটনাস্থলের চারপাশে নদী থাকায় আমরা যেতে পারিনি। যোগাযোগ করলে তারা (গ্রিড কর্তৃপক্ষ) বলেছেন, আপনারা আসার আগেই আগুন নিভে যাবে।’