ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে ব্যবসায়ীর ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো প্রতারক

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি ফোন নম্বর ক্লোন করে এক ব্যবসায়ীর তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক। এ ঘটনায় রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে রৌমারী থানায় জিডি করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন রৌমারীর ফেসবুক পেজে এ নিয়ে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন ইউএনও মো. নাহিদ হাসান খান।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম প্রদীপ সাহা। তিনি রৌমারী উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি। রবিবার সকালে ইউএনওর সরকারি ফোন নম্বর থেকে কল দিয়ে ইউএনও পরিচয়ে তার কাছে চাল বিক্রির বিনিময়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।

প্রদীপ সাহা জানান, রৌমারী উপজেলা প্রশাসনে তিনি স্টেশনারি পণ্য সরবরাহসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক লেনদেন করেন। এজন্য ইউএনওর সরকারি ফোন নম্বর তার মোবাইলে সেভ করা ছিল। রবিবার বেলা ১১টার দিকে ইউএনওর সরকারি ফোন নম্বর থেকে কল করে ৩০ মেট্রিক টন চাল বিক্রির কথা বলে তিন লাখ টাকা চাওয়া হয়। তিনি চাল নেবেন না জানালে অপর প্রান্ত থেকে তার কাছে গ্রাহক চাওয়া হয়। তিনি ময়নুল হক নামে স্থানীয় এক চাল ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ইউএনও পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির কথামতো তিনটি নম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই দফায় তিন লাখ টাকা পাঠানো হয়। কিছুক্ষণ পর আবারও ফোন করে ৫০ হাজার টাকা চাইলে সন্দেহ হয়। তখন উপজেলা প্রশাসনে গিয়ে ইউএনওর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানালে ইউএনও তাদের বলেন তিনি এমন কোনও ফোন করেননি। বিষয়টি তিনি (ইউএনও) জানেনও না। তখন ব্যবসায়ীরা বুঝতে পারেন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন। পরে ইউএনওর পরামর্শে থানায় জিডি করেন প্রদীপ সাহা।

ভুক্তভোগী এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘ইউএনওর সরকারি ফোন নম্বর থেকে কল করে চাল বিক্রির কথা বলে আমাকে তিন লাখ টাকা দিতে বলা হয়। সরকারি নম্বর হওয়ায় পরবর্তী যোগাযোগের জন্য আরেকটি নম্বর দেয়। পরে ওই নম্বরের মাধ্যমে যোগাযোগ করে তিন লাখ টাকা নেয়। সরকারি নম্বর কীভাবে ক্লোন করলো এটাই বুঝে আসছে না। ওই নম্বর থেকে ফোন না আসলে এমন ঘটনা ঘটতো না। বিকালে থানায় জিডি করেছি। দেখা যাক কী হয়।’

আরেক ব্যবসায়ী ময়নুল হক বলেন, ‘প্রদীপ দাদার কথামতো তিনটি নম্বরে তিন লাখ টাকা দিয়েছি। পরে জানতে পারি, এটা প্রতারকের কাজ। প্রদীপ দাদা আমার টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’

উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, রবিবার সকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন দিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে রৌমারী উপজেলার ওএমএস ডিলার ও বণিক সমিতির সভাপতির নম্বর নেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, একই চক্র প্রদীপ সাহাকে ফোন করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

ইউএনও মো. নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে কে বা কারা রৌমারী উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতির কাছে ফোন করে টাকা নিয়েছে। থানায় জিডি করা হয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য ‘উপজেলা প্রশাসন রৌমারী’ নামে ফেসবুক পেজে পোস্ট দেওয়া হয়েছে।’

রৌমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোসাহেদ খান বলেন, ‘জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’