চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতেও বিভক্ত কুড়িগ্রাম বিএনপি

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি। তবে দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতেও ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি দলটি। পৃথক পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলীয় বিভক্তিকে বারবার জনসম্মুখে আনছে তারা।

সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে শহরের মোক্তারপাড়ায় জেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সভাপতি তাসভিরুল ইসলামের অনুসারীরা। পরে কুড়িগ্রাম শহরের এনআর প্লাজার সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির সহসভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল হক রুবেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক উমর ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, জেলা ছাত্রদল সভাপতি আমিমুল ইহসান প্রমুখ।

এর কিছু সময় আগে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জেলা বিএনপির আরেকটি অংশ। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানার নেতৃত্বে জেলা শহরের পোস্ট অফিস পাড়ার কার্যালয় থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে এনআর প্লাজার সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা, সাবেক সহসভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক হাসিবুর রহমান হাসিবসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

উভয় সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, সরকার বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারকে ভয় পায়। এজন্য তাকে চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। সরকার আবারও পাতানো একটি নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় বলেই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। অবিলম্বে বেগম জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান বক্তারা।

দলের সর্বোচ্চ ব্যক্তির মুক্তির দাবিতেও প্রকাশ্য দলীয় বিভক্তি নিয়ে জেলা বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আট বছর ধরে জেলায় কমিটি নেই। বিগত পাঁচ বছর ধরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বে জেলা বিএনপিতে বিভক্তি চলছে। বিভক্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তা ওয়ার্ড কমিটি পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। কেন্দ্রকে বারবার বলার পরও বিভক্তি নিরসনে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।’

দলীয় সভাপতি তাসভিরুল ইসলামের অনুসারী ও জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দল পরিচালনা করেন না। কমিটি গঠন কিংবা ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে তিনি কারও মতামত নেন না। ফলে দলের একটি বৃহৎ অংশ তার থেকে সরে এসেছে। এই অংশটি ঐক্যবদ্ধ আছে এবং ঐক্যবদ্ধ থেকেই সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে জানতে সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।