বিজয়া দশমীতে সিঁদুর খেলায় মাতলেন নারীরা

সিঁদুর খেলা ও বিজয়া দশমীর মাধ্যমে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকেই দিনাজপুরের মন্দিরে মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় বিজয়া দশমীর অঞ্জলি। পরে পূজা শেষে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমাকে।

মাকে বিদায় জানাতে এ সময় অনেক ভক্তই অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। দুর্গা মা যাতে সব অপশক্তির বিনাশ করে সকলের মঙ্গল করেন এই কামনায় প্রার্থনা করেন তারা। এ ছাড়াও পরিবারের সকলের মঙ্গল কামনা করা হয়।

পরে মন্দিরে মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীর নারীরা দুর্গা প্রতিমার সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে মিষ্টিমুখ করিয়ে দেন। এ সময় নারীরা মেতেন ওঠেন সিঁদুর খেলায়। একে অপরের কপালে পরিয়ে দেন দুর্গাদেবীর পায়ে পরানো সিঁদুর। তাদের বিশ্বাস, এই সিঁদুর তাদের পরিবারের সকলের মঙ্গল করবে।

মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়

সনাতন ধর্মমতে, ব্রহ্মাকে বলা হয় সিঁদুরের প্রতীক। ব্রহ্মা জীবনের সকল কষ্ট দূর করে আনন্দে ভরে রাখেন। ললাটে বা ভাগ্যস্থানে ব্রহ্মা অধিষ্ঠিত থাকেন। তাকে তুষ্ট রাখতে সিঁদুর পরার রীতি। এজন্য দশমীর দিনে হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী দেবী বরণের পর স্বামীর মঙ্গল চেয়ে হয় এই সিঁদুর খেলা। এটাকে সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মনে করা হয়। রীতি রয়েছে, স্বামী বা বাড়ির কেউ কাজের জন্য বাইরে গেলে মা-বাবারা দুর্গা-দুর্গা বলেন। যাতে করে বাইরে সকল বাধা-বিপত্তি কেটে যায়। দেবী দুর্গাকে বলা হয় দুর্গতিনাশিনী। তাকে স্মরণ করার সঙ্গে সঙ্গেই মঙ্গল হয়। সিঁদুরের সঙ্গেও রয়েছে এই মাহাত্ম্য।

করা হয় মঙ্গল কামনা

দিনাজপুর রাজবাটি শিবতলী সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বিধান দত্ত বলেন, ‘খুবই সুন্দরভাবে এবং কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই দুর্গাপূজা সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য আমরা সকলের প্রতিই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সকলের সহযোগিতায় আগামীতে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এই উৎসব যাতে উপহার দিতে পারি এই কামনা থাকবে সকলের প্রতি।’

দিনাজপুর পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এ বছর দিনাজপুর জেলায় এক হাজার ২৯৩টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসবের পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির সভাপতি স্বরূপ বকশি বাচ্চু বলেন, ‘কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ এজন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মন্দির কমিটি এবং সকল জনসাধারণের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।