একবছরে এক শিক্ষকের ১০২টি গবেষণাপত্র, প্রতিটি তৈরিতে লেগেছে তিন দিন!

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের  শিক্ষক ড. এ আর এম তৌফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের গবেষণাপত্র নকলের অভিযোগ উঠেছে। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বছরে ১০২টি গবেষণাপত্র তৈরি অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদের কাছে লিখিত অভিযোগ করে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. এ আর এম তৌফিকুল ইসলাম গত এক বছরে চীন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের গবেষণাপত্র থেকে কপি করে ১০২টি গবেষণাপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হিসাব অনুযায়ী ওই শিক্ষকের একটি গবেষণা করতে গড়ে তিন দিন সময় লেগেছে- যা অবিশ্বাস্য। 
অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষক তৌফিকুল ইসলাম অর্থের বিনিময়েও ব্রাজিলের ড. গুইহারমি মালাফাইয়ার নকল করা গবেষণাপত্রও সংগ্রহ করেছেন। অভিযোগে ওই শিক্ষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, যত বড়ই শিক্ষক ও মেধাবী শিক্ষার্থী বা গবেষক হোক না কেন বছরে সর্ব্বোচ্চ ৫ থেকে ৬টি গবেষণাপত্র তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু গড়ে তিন দিনে একটি ও এক বছরে শতাধিক গবেষণাপত্র তৈরি করেছেন- বিষয়টি জালিয়াতি ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। শিক্ষকদের মাঝে জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনা গবেষণার নামে প্রতারণা বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। পুরো বিষয় তদন্ত করে দেখা দরকার আসলে অভিযোগগুলো সত্য কিনা।

অভিযুক্ত শিক্ষক ড. এ আর এম তৌফিকুল ইসলাম দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো একেবারেই সত্য নয়।

তবে গড়ে তিন দিনে একটি করে গবেষণাপত্র তৈরি করা সম্ভব কি না এই প্রশ্নের উত্তর দেননি অভিযুক্ত শিক্ষক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ জানান, এ ধরনের একটি অভিযোগ দেওয়ার কথা শুনেছেন। তবে অভিযোগটি এখনও তার কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।