মসিউর রহমান রাঙ্গার নগদ অর্থ বেড়েছে ১৫ গুণ

সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব ও রংপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান রাঙ্গা। গত ৫ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১৫ গুণেরও বেশি। সেই সঙ্গে আগেরবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নগদ অর্থ জমা না থাকলেও এবার তিনি দেড় কোটি টাকার বেশি গচ্ছিত আছে বলে দেখিয়েছেন। এ ছাড়াও ৫ বছরে জমিসহ স্থাবর সম্পদ বেড়েছে অনেক।

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা সহায়-সম্পদ বিষয়ে হলফনামায় এ তথ্য জানা গেছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় রাঙ্গা উল্লেখ করেছিলেন তার নগদ অর্থ ২৭ লাখ ৮ হাজার ৫৪৬ টাকা। গত পাঁচ বছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখ ৬ হাজার ৬২৮ টাকা। অন্যদিকে পাঁচ বছর আগে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছিল ৮৯ লাখ ৫৬ হাজার ৯৩৪ টাকা। এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দাখিল করা হলফনামায় দেখানো হয়েছে ২ কোটি ১ লাখ ৪ হাজার ২১৫ টাকা।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মসিউর রহমান রাঙ্গা হলফনামায় ব্যাংকঋণ দেখিয়েছিলেন ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪১৫ টাকা। তার কৃষি খাত থেকে আয় দেখানো হয়েছিল বছরে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৪৩৮ টাকা। এ ছাড়া বাড়ি ভাড়া পেতেন ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৮৭ টাকা। ব্যবসা বাবদ আয় ছিল ৪৪ লাখ ৬৯ হাজার ৩৫ টাকা। চাকরি খাতে আয় দেখানো হয়েছিল ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৮০ টাকা।

এ ছাড়াও অন্যান্য খাতে আয় দেখানো হয়েছিল ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৩২ টাকা। অপরদিকে রাঙ্গার স্থাবর সম্পদ, কৃষিজমি, আবাসিক ও বাণিজ্যিক দালান ও ফিলিং স্টেশন রয়েছে। যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি নিজেকে পরিবহন মালিক ও সাধারণ ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করেছেন। তবে এর আগে তার নামে কোনও মামলা নেই বলে উল্লেখ করলেও এবার তার বিরুদ্ধে মামলার কথা উল্লেখ করেছেন।

এ ছাড়াও বিগত পাঁচ বছরে বেড়েছে তার জমিসহ স্থাবর সম্পত্তিও। ২০১৮ সালের হলফনামায় জমির পরিমাণ ১২ একর ৩৩ শতক দেখানো হয়েছিল। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ একর ৫৪ শতকে। আর পাঁচ বছর আগে কৃষি, অকৃষিজমি, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, বাগান ও খামারের মূল্য ও আয় ছিল ৩ কোটি ৬৪ লাখ ২০ হাজার ২৭৫ টাকা। এবার দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ৪৯ হাজার ৬৩৬ টাকা।

২০১৮ সালে ব্যাংকঋণ দেখানো হয় ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪১৫ টাকা। আর এবারের হলফনামায় ব্যাংক ঋণ দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৩২ হাজার ৭৭৭ টাকা। আয়ের উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন কৃষি খাত, বাড়ি ও দোকান ভাড়া, ব্যবসা, চাকরিসহ শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র।

মসিউর রহমান রাঙ্গা রংপুর-১ আসন থেকে ২০০১ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে দুবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মোট তিনবারই তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে সাংসদ নির্বাচিত হন। কিন্তু এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ইতোমধ্যে রিটার্নিং অফিসার যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকবেন নাকি দলীয় প্রার্থী হবেন এ জন্য ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এ আসনে এবার জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের আপন ভাতিজা সাবেক এমপি আসিফ শাহারিয়ারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

তবে রাঙ্গা জানিয়েছেন, ২০ বছর ধরে গঙ্গাচড়ার সকল স্তরের মানুষের পাশে থেকে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। নদীভাঙন রোধে তিস্তা নদীর ডান তীর বাঁধ নির্মাণ করেছেন। এলাকার মানুষ নির্বাচনে তার পক্ষে রায় দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।