গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরোজা বারীর মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার। ঢেঁকি প্রতীকে ৬৬ হাজার ৪৯ ভোট পেয়ে তিনি বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাতীয় পার্টির দুইবারের এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩ হাজার ৪৯১ ভোট।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তারিকুল ইসলাম এ ফল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনে জয়ের পর নিজ বাড়িতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লা নাহিদ নিগার বলেন, সবার এতগুলো ভালোবাসা, এতগুলো কষ্ট, এতগুলো চাওয়া আর এতগুলো শক্তি একসঙ্গে হয়েছে, এটাই আসল জয়। মানুষের এমন ভালোবাসায় আমি অসংখ্য খুশি। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ আমাকে যে তৌফিক দান করেছেন তা জীবনের আমার অনেক বড় দায়িত্ব। আমি সবার জন্য যেটা চেয়েছি তা পেয়েছি। আমার শেষ বিন্দু রক্ত, যতটুকু আমার ক্ষমতা আছে শতভাগ উজাড় করে দেবো। যেন এই ভালোবাসা থেকে সবাই আমাকে যেটা দিয়েছে, সেটা যেন আমি তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে পারি। তারা আমাকে যে ভোট দিয়ে জয়ী করেছে তাদের এই ঋণ ফিরিয়ে দিতে পারি।
এ সময় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উন্নয়নে পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার বলেন, প্রথমত সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবাকে গুরুত্ব দেওয়া ও চরাঞ্চলে নদী শাসন এবং বাঁধ নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে বেকার যুবসমাজের জন্য শরীর চর্চা ও খেলাধুলার জন্য ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ে মাঠ নির্মাণে এবং খেলার সরঞ্জাম দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। একটি ডায়াবেটিক হাসপাতালসহ সর্বপরি একটি টেকনোলজি পার্ক করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, সবার প্রতিই আমি কৃতজ্ঞ। এই জয় আপনাদের, এই অক্লান্ত পরিশ্রমের যে জয় হয়েছে তার সবকিছুর ভাগিদার আপনারা সবাই। আমাকে সবাই বলছিল যে, আমি অনেক কপালী মেয়ে। এই পুরো ভালো কপালটা সুন্দরগঞ্জবাসীর সবার যেন হয়, সেটার জন্য আমার চেষ্টা থাকবে সবসময়।
এর আগে, রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আসনটির ১১৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-১ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৯১ হাজার ৪৬০ জন। এর মধ্যে এক লাখ ১৬ হাজার ৯৪ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
জোটগত সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগ গাইবান্ধা-১ আসন ছেড়ে দেয় জাতীয় পার্টিকে। এ কারণে নৌকার মনোনয়ন পেয়েও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হয় আফরোজা বারীকে। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেও মেয়ে নাহিদ নিগার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। ঢেঁকি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদ নিগার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের (প্রস্তাবিত) সদস্য।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে নাহিদ নিগার, শামীম হায়দার পাটোয়ারীসহ মোট ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে জাসদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিসহ দলীয় প্রার্থী ছয় জন এবং বাকি চার জন স্বতন্ত্র।