হাসপাতাল পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সংবাদ সরবরাহের আদেশ

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুছ আলীর বিরুদ্ধে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পরেও তথ্য প্রদান না করায় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে তথ্য অধিকার কমিশন। গত ২২ জানুয়ারি শুনানি শেষে এ আদেশ প্রদান করা হয়।

ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন ও অনলাইন নিউজ বাংলা ট্রিবিউনের রংপুর প্রতিনিধি লিয়াকত আলী বাদলের দায়ের করা অভিযোগে (নম্বর-২৩৩/২৩)  দুই পক্ষের শুনানি শেষে প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আব্দুল মালেক, তথ্য কমিশনার শহীদুল হক ঝিনুক ও মাসুদা ভাট্টি সর্বসম্মতভাবে এ আদেশ প্রদান করেন। সেই সঙ্গে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবাদ প্রতিনিধি লিয়াকত আলী বাদল যেসব তথ্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন তার সবগুলো তথ্য সরবরাহযোগ্য উল্লেখ করে সেগুলো সরবরাহের আদেশ দিয়েছেন।

এর আগে, গত ২২ জানুয়ারি তথ্য কমিশন জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে অভিযোগের শুনানি করেন। তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী সাংবাদিক বাদল আবেদনকারী হিসেবে আবেদনের সপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন। অপর দিকে বিবাদী হিসেবে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুছ আলী অংশ নেন।

শুনানিতে আবেদনকারী লিয়াকত আলী বাদল অভিযোগ করেন, গত বছরের ১৭ জুলাই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে ৬ ধরনের তথ্য সরবরাহ করার জন্য লিখিতভাবে আবেদন করেন। আবেদনপত্রটি হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় প্রাপ্তিস্বীকার পত্রে স্বাক্ষর করে রিসিভ করে। আবেদন করার পর ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী হাসপাতালের পরিচালকের তথ্য সরবরাহের বাধ্যবাধকতা থাকলেও পরিচালক কোনও তথ্য সরবরাহ করেননি। বাধ্য হয়ে আবেদনকারী তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে আপিল করেন। আপিল করার পরেও কোনও তথ্য না পাওয়ায় তথ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

তথ্য কমিশন আবেদনকারীর অভিযোগ গ্রহণ করে গত ১৮ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই তারিখে আবেদনকারী জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে হাজির হয়ে হাজিরা প্রদান করলেও বিবাদী রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অনুপস্থিত থাকায় তথ্য কমিশন অভিযোগটি শুনানির জন্য ২২ জানুয়ারি ধার্য করেন।

শুনানিকালে আবেদনকারী অভিযোগ করেন, তাকে কোনও তথ্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সরবরাহ করেন নাই। এমনকি তথ্য সরবরাহ করার ব্যাপারে কোন কথাও বলেন নাই। অপর দিকে, বিবাদী রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুছ আলী মন্ত্রীর মিটিংসহ বিভিন্ন কারণে তথ্য সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান। এ ছাড়াও গত ১৮ ডিসেম্বর প্রথম শুনানির দিন ইন্টারনেট সংযোগ সমস্যা করায় যথাসময়ে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি।

শুনানিকালে কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আব্দুল মালেক, কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক ও মাসুদা ভাট্টি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আবেদনকারীর চাওয়া সবগুলো তথ্য সরবরাহযোগ্য। কিন্তু পরিচালক বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়েছেন যা গ্রহণযোগ্য নয়।’

শুনানি শেষে রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুছ আলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আবেদনকারী সংবাদ প্রতিনিধির আবেদন করা সকল তথ্য সরবরাহ করার আদেশ দেয় কমিশন।