বাড়ছে তাপমাত্রা, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে কমবে শীতের আমেজ

উত্তরের নদ-নদীবিধৌত জেলা কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় মানুষের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে। প্রকৃতিতেও যেন প্রাণের সঞ্চার হচ্ছে। পাতাঝরা গাছপালায় নতুন কুঁড়ি আসতে শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে শীতের বিদায় যাত্রা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, গত তিন দিন ধরে জেলায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়ছে। বুধবার জেলায় দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি এবং ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা কমে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলেও এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় শৈত্যপ্রবাহেরও পূর্বাভাস নেই।

পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে রংপুর বিভাগের কিছু কিছু স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শীতের আমেজ কমতে শুরু করবে।’

এদিকে, শীতের তীব্রতা কমায় জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। কৃষকরা মাঠে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করছেন। বোরো মৌসুমে জেলাজুড়ে ধানের চারা রোপণের ধুম পড়েছে। মানুষ দিনের বেলা শীতের কাপড় ছাড়াই বের হতে শুরু করেছে। প্রকৃতিতে উষ্ণতা ফিরে আসায় খালবিলে জমে থাকা পানিতে মাছ শিকারে নামছেন কেউ কেউ।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলার উলিপুরের তবকপুরের একটি বিলের পানিতে নেমে মাছ ধরছিলেন বছির উদ্দিন। আবহাওয়ার উষ্ণতায় তিনি জড়তা ছাড়াই মাছ শিকার করছিলেন। বছির বলেন, ‘ঠান্ডা কমছে। কয়দিন ঘর থাকি বের হওয়া যায় নাই। এলা মানুষ মনে হয় হাত-পাও ছাড়ি দিয়া (হাত-পা ছেড়ে দিয়ে) বের হবার লাগছে। হামরাও পানিত নামছি যদি কিছু মাছ পাওয়া যায়!’

এদিকে শীতের তীব্রতা কমলেও জেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংগঠনের উদ্যোগে জেলার চরাঞ্চলের শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে।

জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা জানায়, চলমান শীতে জেলায় প্রায় ৭০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও খাদ্য সহায়তা হিসেবে প্রায় ১৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।