বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে এলো ছেলে

বাবা মানেই আদর-স্নেহ, ভালোবাসা ও আস্থার জায়গা। সন্তানের কাছে তার বাবা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বাবা মানেই অনুপ্রেরণা, বাবা মানেই মনোবল, বাবা মানেই শক্তি। বাবার হাত ধরেই প্রথমবার স্কুলে যাওয়া। বাবাকে নিয়েই পরীক্ষার কেন্দ্রে যায় অনেকে। এসএসসি পরীক্ষা শিক্ষাজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই অধ্যায়ে সকল সন্তানই বাবাকে পাশে চায়। যে তাকে মনোবল দিয়ে সাহস জোগাবে। কিন্তু এমন সময়ের আগের দিন যদি বাবার মৃত্যু ঘটে তাহলে সেটি সন্তানের পক্ষে একটি বড় ধরনের ধাক্কা। আর এই অবস্থাতে সন্তানের পক্ষে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা প্রায় অস্বাভাবিকই হয়।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মাহানপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন সৈকত। তার কেন্দ্র পড়েছে একই উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের রহিম বখস উচ্চ বিদ্যালয়ে। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সৈকতের বাবা মারা যায়। জানাজা হবে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায়। এই অবস্থাতে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ছেলে।

জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সৈকতের বাবা বীরগঞ্জ উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা শফিউল আলম সুরুজ মারা যান। তিনি ওই ইউনিয়নের মেম্বার (সদস্য) ছিলেন।

মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোপাল দেব শর্ম্মা জানান, শফিউল আলম সুরুজ মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দুইবারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। তার নামাজে জানাজা বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মৃত বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই তার ছেলে সৈকত এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।

বীরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার আলী শাহ বলেন, ‘সৈকত মাহানপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের মেধাবী ছাত্র। বাবার মৃত্যুর পরেও  সে আজ বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা দিয়েছে।’