আগের দিন যে পুকুরে খুঁজলো পুলিশ, পরদিন সেখানে ভেসে উঠলো লাশ

রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় নিখোঁজের দুদিন পর উম্মে হাবিবা নামে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর লাশ পুকুরে ভেসে উঠেছে। খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার পারুল ইউনিয়নের চালুনিয়া গ্রামের পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত উম্মে হাবিবা (৭) চালুনিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের মেয়ে এবং স্থানীয় মিলেনিয়াম চাইল্ড স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি থেকে খেলতে বের হয়ে নিখোঁজ হয় হাবিবা। এরপর সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও সন্ধান পাননি স্বজনরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির পাশে আল আমিনের পুকুরে তার লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা স্বজনদের খবর দেন। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। 

আব্দুল হাকিম বলেন, ‘শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একমাত্র মেয়ে হাবিবা বাড়ি থেকে খেলতে বের হয়। এরপর থেকে সন্ধান না পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় পীরগাছা থানায় নিখোঁজের জিডি করেছি। উপজেলাজুড়ে মাইকে প্রচার চালিয়েও মেয়ের সন্ধান পাইনি। রবিবার সকালে পীরগাছা থানা পুলিশ এলাকায় এসে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশী আল আমিনের পুকুরে মাছধরা জাল ফেলে সন্ধান চালিয়েও হদিস পায়নি। একদিন পর ওই পুকুরে লাশ ভেসে উঠলো। এটি সন্দেহজনক। প্রতিবেশী হাফিজুর রহমান, বাদল রহমান, নাজমুল হোসেনের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছে আমার। ধারণা করছি, ওই বিরোধের জেরে মেয়েকে আটকে রেখে নির্যাতন করে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে তারা। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছাড়া কিছুই নয়। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।’

পীরগাছা থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সোমবার দুপুরে যে পুকুরে লাশ ভেসে উঠেছে, সেটিতে রবিবার মাছধরা জাল দিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম আমরা। কিন্তু কোনও সন্ধান পাইনি। আমাদের ধারণা, শিশুটিকে হত্যার পর লাশ লুকিয়ে রেখেছিল খুনিরা। রবিবার রাতের কোনও একসময়ে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। সোমবার দুপুরে ভেসে ওঠে। শিশুটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে।’ 

এটিকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে পীরগাছা থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, শিশুটিকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। আরও কিছু ক্লু পেয়েছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় মামলা করেছেন স্বজনরা। আশা করছি, হত্যাকাণ্ডের রহস্য দ্রুত উদঘাটন করতে পারবো।’