লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের চন্দ্রপুরের বুড়িরহাট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল শুক্রবার ভোররাতে চন্দ্রপুরের বুড়িরহাট ৯১৩/৪ নম্বর পিলার থেকে ১০০ গজ দূরে ভারতের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মুরুলী চন্দ্র রায় (৪০) কালীগঞ্জের চন্দ্রপুর ইউনিয়নের উত্তর বালাপাড়া গ্রামের সুশীল চন্দ্র রায়ের ছেলে। গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন কালীগঞ্জের চন্দ্রপুর গ্রামের আজিমুল হকের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৩) ও নুর ইসলামের ছেলে লিটন মিয়া (৪৩)।

পুলিশ, বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার গভীর রাতে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় বাংলাদেশি ১০-১২ জন গরু পাচারকারী ভারতে প্রবেশ করেন। গরু নিয়ে ভোররাতে ফেরার সময় বুড়িরহাট ৯১৩/৪ নম্বর পিলার থেকে ১০০ গজ দূরে ভারতের ভেতরে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার জলপাইগুড়ি-৭৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে মুরুলী চন্দ্র, মিজানুর রহমান ও লিটন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় গরু পাচারকারী দলের অন্য সদস্যরা আহত তিন জনকে বাংলাদেশের ভেতরে নিয়ে আসেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুরুলী চন্দ্রকে রংপুরে নেওয়ার পথে মারা যান। আহত মিজানুর রহমান ও লিটন মিয়া গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ মুরুলীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। 

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, ‘নিহত মুরুলী চন্দ্র রায়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক মুরুলী চন্দ্র রায় নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

এর আগে গত সোমবার রাতে লালমনিরহাটের আদিতমারীর দুর্গাপুর ইউনিয়নের দীঘলটারী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে লিটন মিয়া (১৯) নামের এক বাংলাদেশি গুরুতর আহত হন। কোচবিহার জেলা শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাতে লিটন মারা যান। গত বুধবার রাতে বিএসএফের পক্ষ থেকে বিজিবির কাছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার জাওরানি সীমান্ত দিয়ে লিটনের লাশ হস্তান্তর করা হয়।