মৌলভীবাজারে চা শ্রমিকদের ২০০ টাকা দৈনিক মজুরি দাবি

চা শ্রমিকদুপুরে জুটছে না ভাত, খাবার শুধু রুটি আর মরিচের চাটনি। ঝুপড়ি ঘরের অন্ধকারে বসবাস শ্রমিকদের। অর্থের অভাবে বন্ধ থাকে চিকিৎসা। মৌলভীবাজারের ৯১টি চা বাগানের লক্ষাধিক শ্রমিক দীর্ঘদিন ধরে এমনটাই দাবি করে আসছেন। এই মে দিবসে তাদের দাবি ছিল, দৈনিক ৮৫ টাকা নয়, বরং ২০০ টাকা চাই।
জানা গেছে, দিনভর খাটুনির পর দৈনিক ভাতা হিসেবে ৮৫ টাকা পাওয়ার পর প্রতি সপ্তাহে ১.২৫ টাকা দরে মেলে ৩ কেজি ২৭০ গ্রাম করে আটা। চালিয়ে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে বলে শ্রমিকরা জানান।
চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন। তিনি বলেন, ‘এমনিতেই সব ধরনের মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত চা শ্রমিকরা। ভাল খাইলে ওষুধ জুটেনা, ওষুধ জুটলে শিক্ষা নাই। তাই ২০০ টাকা দিনমজুরির দাবি উঠেছে।’

মৌলভীবাজারের ৯১টি চা বাগানে প্রায় ৮৭ হাজার স্থায়ী আর ২৫ হাজারের মত অস্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন। দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ৬৯ টাকা থেকে বেড়ে ৮৫ টাকা হয় দিনমজুরি। স্থায়ী শ্রমিকরা জনপ্রতি দিন শেষে ৮৫ টাকা হিসেবে সারা সপ্তাহে মজুরি পান মাত্র ৫৯৫ টাকা। কিন্তু অস্থায়ী শ্রমিকরা এই মজুরিও পান না।

চা শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, এত অল্প টাকায় ঠিকমতো দুপুরের ভাত খাওয়া যায় না। রেশন হিসেবে পাওয়া নিম্নমানের আটার রুটি, টমেটো ও কাঁচামরিচের বানানো চাটনি দিয়ে দুপুরে খেতে হয়।

আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন ২০১৬কুলাউড়ায় ভোট যুদ্ধে দুই নবাব!

মনু-ধলাই ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা জানান, টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় অনেকেই বাগানে মারা যান। বাগান মালিক ও বাগান ব্যবস্থাপকদের রক্ষচক্ষুর ভয়ে অনেক শ্রমিক চুপ থাকেন। কিন্তু কতদিন আর এমন চলবে। শ্রমিকদের মজুরি যাতে বাড়ে সে লক্ষ্যে আন্দোলন চলবে।

শমসেরনগর বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত কানু জানান, বাজারে একজন সাধারণ শ্রমিকের মজুরি ৩০০ টাকা। সে অনুযায়ী না হলেও যেনও ২০০ টাকা মজুরি পান চা শ্রমিকরা।

মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. কামাল হোসেন বলেন, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ মৌলিক অধিকারের বিষয়ে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি একমত রয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি ও জীবনমান উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। চা শ্রমিকদের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

/এমও/এইচকে/