ডিএনএ পরীক্ষার জন্য জঙ্গি মুসার মা সিলেটে

জঙ্গি মুসা (ছবি: ফোকাস বাংলা)সিলেটের শিববাড়িতে আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোদের অভিযানে নিহত কাওসারই জেএমবি’র জঙ্গি মুসা কি না তা নিশ্চিত করতে মুসার মা সুফিয়া বেগমকে কড়া নিরাপত্তা মধ্য দিয়ে সিলেটে নিয়ে আসা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে তিনি সিলেটে পৌঁছান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘ভোটার কার্ড অনুযায়ী নিহত জঙ্গির নাম কাওসার। তবে সে আসলে জঙ্গি মুসা কি না এ বিষয়টি নিশ্চিত হতেই মুসার মাকে নিয়ে আসা হয়েছে।’

জেদান আল মুসা আরও জানান, ‘আতিয়া মহলে আরও দুই জঙ্গির লাশ পড়ে রয়েছে। এখনও বোম্ব ডিসপোজাল টিম এসে পৌঁছায়নি। যার কারণে নিহত জঙ্গিদের উদ্ধার করতে সময় লাগছে। ওই এলাকাটি পুরো নিয়ন্ত্রণে রেখেছে পুলিশ। এছাড়াও ১৪৪ দ্বারা বহাল রয়েছে।’

উল্লেখ্য নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিনের (জেএমবি) অন্যতম শীর্ষ নেতা মঈনুল ইসলাম ওরফে মুসার মা, ভাই ও বোনকে বুধবার আটক করে পুলিশ। রাজশাহীর বাঘমারায় মুসার গ্রামের বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছিম আহম্মেদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মুসার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাঘমারায় বুজরুককোলা গ্রামে মুসার বাড়ি থেকে তার মা সুফিয়া খানম, সৎ ভাই খায়রুল ইসলাম ও বোন কামরুন্নাহারকে আটক করা হয়।  

এর আগে নাছিম আহমেদ মুসার মায়ের বরাত দিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছিলেন, জঙ্গি মুসা বাগমারা থেকে নিজের জমিজমা বিক্রি করে চলে যায়। গ্রাম থেকে চলে যাওয়ার আগে বাড়িতে থাকা তার ছবিসহ বেশ কিছু কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলেছিল। এরপর থেকে সে পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেনি।

মঙ্গলবার রাত ১০টায় রাজশাহীর বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছিম আহম্মেদ আরও জানান, সিলেটের শিববাড়ি আতিয়া মহলের জঙ্গি আস্তানায় নিহত এক যুবকের সঙ্গে নব্য জেএমবি’র শীর্ষ নেতা মঈনুল ইসলাম ওরফে মুসার চেহারার মিল পাওয়া গেছে। তবে লাশ সনাক্ত কিংবা নেওয়ার জন্য পরিবারের কাছে খবর পাঠানোর জন্য তখন পর্যন্ত (২৮ মার্চ রাত পর্যন্ত) কোনও নির্দেশনা পায়নি বাগমারা থানা পুলিশ। তবে পুলিশ সদর দফতর থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হবে তা মুসার পরিবারকে জানানো হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সাল থেকেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে জেএমবির অন্যতম শীর্ষ নেতা মঈনুল ইসলাম ওরফে মুসা। ওই সময় রাজশাহী অঞ্চলে বাংলা ভাইয়ের অপারেশন শুরু হলে তার হাত ধরেই সে জেএমবিতে যোগ দেয়। এমনকি বাংলা ভাইয়ের অন্যতম সহযোগী হিসেবে মুসা কাজ করতে থাকেন। বয়সে ছোট হওয়ায় সে সময় প্রশাসনের নজরে আসেনি জঙ্গি মুসা। ওই সময় মুসা বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। সেখান থেকে এইচএসসি পাস করার পর তিনি রাজশাহী কলেজে ভর্তি হয়। পরে রাজশাহী কলেজ থেকে টিসি নিয়ে ভর্তি হয় ঢাকা কলেজে। সেখান থেকে মুসা ইংরেজিতে মাস্টার্স পাস করে। এরপর একটি ইংলিশ মিডিয়ামে চাকরির পাশাপাশি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবিকে গুছানোর কাজ শুরু করে।

/এফএস/ 

আরও পড়ুন-

‘মাইনা’ থেকে জঙ্গি মুসা