গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি রকিব মিছিলে!

মিছিলে প্লা-কার্ড হাতে গ্রেফতারি পরোয়নাভুক্ত আসামি রকিব আলীসিলেটের হকার সিন্ডিকেটের হোতা রকিব আলী নগরীর ফুটপাতে অবৈধ ব্যবসার দায়ে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। তবে পুলিশের কাছে ‘নিখোঁজ’ রকিব আলীকে মঙ্গলবার একটি মিছিলে দেখা গেছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সিলেট মহানগর হকার্স লীগের ব্যানারে সিন্ডিকেটের সদস্যদের নিয়ে মিছিল করেন তিনি। ওই সময় সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করলেও রকিবকে গ্রেফতার করা হয়নি। শুধু রকিব নয়, ওই মিছিলে অংশ নেয় আদালতের পরোয়ানাভুক্ত অন্তত ১০ জন হকার নেতা।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্বের ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ আনন্দ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলে মহানগর হকার্স লীগের ব্যানারের ঠিক সামনেই রকিবকে দেখা যায়।  

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন খবর পুলিশের কাছে ছিল না।’

তিনি জানান, রকিবকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও রাজনৈতিক প্রভাবে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও সিলেটের হকার নেতা রকিব আলীকে শহরের কোর্ট পয়েন্ট ও পোস্ট অফিসের আশেপাশে চলাফেরা করতে দেখা যায়। এমনকি তাকে তার নিয়োগকৃত ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিতেও দেখেছেন অনেকে। রকিব ছাড়াও পরোয়ানাভুক্ত অন্যান্য আসামিদের এলাকার বিভিন্ন সিএনজি-অটোরিকশা স্ট্যান্ডের কার্যক্রম চালাতে দেখা গেছে।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত রকিবসহ অধিকাংশ আসামি নগরীতে প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও পুলিশ তাদেরকে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে গ্রেফতার করছে না। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরেও দেওয়া আছে। রকিব প্রতিদিন তার লোকজন দিয়ে হকারদের কাছ থেকে সমিতির নামে টাকা উত্তোলন করে আসছে। রকিবের ক্যাশিয়ার লাহিন এখন সবকিছু ম্যানেজ করছে। রকিবের নেতৃত্বে শোডাউনের ছবি তুলে গোয়েন্দা পুলিশ ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ৫ অক্টোবর ‍‍‌আদালতের নির্দেশের পরেও হকার নিয়ন্ত্রণকারীদের তালিকা দেননি মেয়র আরিফ শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউন-এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে ৮ অক্টোবর মেয়র আরিফ ও সদর থানার ওসিকে তলব করেন আদালত। এরপর আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ অক্টোবর ফুটপাত নিয়ন্ত্রণকারীদের তালিকা দেন মেয়র আরিফ। গত ১৯ অক্টোবর আদালত সিলেট মহানগর হকার্স কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি রকিব আলীসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন ১৫ কিলোমিটার ফুটপাত রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার ফুটপাত অবৈধভাবে হকাররা দখল করে রেখেছে। ফুটপাত ছাড়া আরও অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকার মূল সড়কও দখল করে ব্যবসা করছে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। সিটি করপোরেশনের ফুটপাত ছাড়া আরও  প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে সওজের ফুটপাত।

এ সংক্রান্ত সংবাদ:

আদেশ অমান্য করায় সিলেট মেয়র আরিফ ও ওসিকে আদালতে তলব

সিলেটে ২৬ জনের নামে পরোয়ানা জারি হলেও থানা পেয়েছে ৫ জনের