মাইকিং ছাড়া নির্বাচনি প্রচারণা হচ্ছে যেখানে

নির্বাচন মানেই মাইকিং আর মাইকিং মানেই শব্দদূষণ। নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ের আগে প্রার্থীরা নেমে পড়েন শব্দদূষণের প্রতিযোগিতায়। তবে নির্বাচনি মাইকিংয়ের ডামাডোল পরিহার করে ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট পৌরসভা।

চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচনে চলছে মাইকিং ছাড়া ব্যতিক্রমী প্রচারণা। নির্বাচনি প্রচারণায় মাইক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। জনপ্রতিনিধিদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সর্বসাধারণ।

চতুর্থ ধাপে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে তিন জন মেয়র প্রার্থীসহ ৫৫ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র নাজিম উদ্দিন শামছু, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম রুবেল এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুল বাছির।

পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর ৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদিন সর্বনিম্ন একটি করে ৫৫টি মাইক ব্যবহার করলেও এর উচ্চশব্দে নাজেহাল হতে হতো পৌরবাসীকে। মাইকবিহীন এ প্রচার অন্য সব নির্বাচনে নজির সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

চুনারুঘাট বাজার এলাকার ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, ‘বহু নির্বাচন দেখেছি, মাইকিং ছাড়া প্রচারণা সত্যিই খুবই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। চুনারুঘাট পৌর নির্বাচনে মাইকিং ছাড়া প্রচারণা শিক্ষণীয় বিষয়। অন্য সকল এলাকায় মাইকিং ছাড়া নির্বাচনি প্রচারণার এমন উদ্যোগ নিলে মানুষ উপকৃত হবেন।’

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র নাজিম উদ্দিন শামছু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উচ্চশব্দে মাইকিংয়ে জনজীবনে সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মাইক বাজানো বন্ধ রেখেছি।’

আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাইফুল আলম রুবেল বলেন, ‘আমরা যারা প্রার্থী রয়েছি তারা মানুষের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের আহ্বানে মাইকিং করা থেকে বিরত রয়েছি।’

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সত্যজিৎ রায় দাশ বলেন, ‘নির্বাচনি আচরণবিধির সভায় সাধারণ মানুষের সমস্যা বিবেচনায় মাইকিং ছাড়া নির্বাচনি প্রচারণা করার আহ্বান জানালে প্রার্থীরা সাড়া দেন। মাইকিং ছাড়াই নির্বাচনি প্রচারণা চলছে। এজন্য সকল প্রার্থীকে ধন্যবাদ।’

প্রসঙ্গত, চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচনে মোট ভোটার ১৪ হাজার ৪০২ জন। ৯টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রের ৪৬টি গোপন কক্ষে এই ভোট গ্রহণ হবে। গত ২৮ জানুয়ারি চুনারুঘাট পৌর নির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনি আচরণবিধি সম্পর্কিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায়ই মাইক না ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়।