নির্যাতন থেকে বাঁচতে ভাড়াটে খুনি দিয়ে ছেলেকে হত্যা

অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাবার বিরুদ্ধে ভাড়াটে খুনি দিয়ে মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যা করানোর অভিযোগ উঠেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মাহরাম গ্রামে। হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই যুবকের নাম জাহাঙ্গীর আলম (২৮)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাবার নাম মোহাম্মদ আলী।

পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ২১ মে রাতে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে মাহারাম নদীর তীরে গলাকেটে কে বা কারা খুন করে। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের বাবা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে একই এলাকার আহসান হাবিব ( ২২) মো. সোলাইমান (২২) ও তৌফিকুল ইসলাম ভূইয়ার (২৮) নামে তাহিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ একমাস তদন্তের পর ক্লুলেস মার্ডারের মোটিভ জানা যায়। অভিযুক্তদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন তথ্য ও প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে একই এলাকার সুরুজ মিয়াকে (৫৫) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরে সুরুজ মিয়া ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। হত্যাকাণ্ডে সেকানদার আলী (৫৫) নামে একজন তাকে সহায়তা করেছেন বলেও জানান তিনি।

পুলিশ জানায় জিজ্ঞাসাবাদে সুরুজ বলেছেন, মোহাম্মদ আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম মাদকাসক্ত ছিল। তার অত্যাচারে পরিবারের সবাই অতিষ্ঠ ছিল। কোনও উপায় না দেখে মোহাম্মদ আলী সুরুজ মিয়া ও সেকানদার আলীকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ছেলেকে হত্যার নির্দেশনা দেন। পরে ২১ মে রাতে জাহাঙ্গীরকে টাকা দেওয়ার কথা বলে মাহারাম নদীর তীরে নিয়ে যায় সুরুজ। সেখানে সেকানদারকে সঙ্গে নিয়ে জাহাঙ্গীরকে হত্যা করে সুরুজ। হত্যার পর জাহাঙ্গীরের বাবা মোহাম্মদ আলীকে মোবাইলফোনে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

সুরুজের দেওয়া তথ্যে সেকানদার আলীকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়। আটক দুই ব্যক্তিই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়। ভাড়াটে খুনি সেকানদার ১৯৯৬ সালে একটি হত্যা মামলার ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে ২০১২ সালে উচ্চ আদালতে আপিল করে জেল থেকে বের হয়ে আসে।

পুলিশ সুপার জানান, জাহাঙ্গীর আলম হত্যা মামলার বাদী মোহাম্মদ আলীই এখন আসামি। তার বিরেুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।