সিলেটে যে কারণে সালমান স্মরণে নেই কর্মসূচি

বাংলা সিনেমার উজ্জ্বল নক্ষত্র ও ক্ষণজন্মা চিত্রনায়ক সালমান শাহ’র ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর)। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য এবার সিলেটে সালমান স্মরণে কোনও কর্মসূচি পালিত হবে না। একইসঙ্গে সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়াস্থ সালমাস শাহ ভবনে কোনও ভক্ত কিংবা পর্যটকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। 

রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা ভক্তদের সালমান শাহ ভবন থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

জানা যায়, সিনেমার জন্য শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন হয়ে উঠেছিলেন সালমান শাহ। ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি সিলেটের জকিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী

সালমান শাহ’র মামা আলমগীর কুমকুম বলেন, সালমান শাহকে এখনও মানুষ অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করে ও ভালোবাসে। মানুষ মরে গেলে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা কমে গেলেও সালামান শাহ’র প্রতি তা কমে যায়নি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সিলেটে সালমান শাহ’র মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কোনও কর্মসূচি পালন করা হবে না। 

তবে সালমান ভক্তদের তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে যার যার অবস্থান থেকে দোয়া করার অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাদের ইমনকে (সালমান শাহকে) যেভাবে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এর যথাযথ বিচার এখনও হয়নি। আমরা চাই অপরাধীদের দ্রুত বিচার হোক। ভক্তরা দেশের বিভিন্নস্থান থেকে এখনও আসেন। আমি তাদের আবেগকে শ্রদ্ধা জানাই। তারা যে এখনও সালমানকে মনে রেখেছে, এটা ভাবলেও গর্ব হয়।’

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ ফ্ল্যাটে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় এই নায়কের লাশ। সে সময় তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। পরে অপমৃত্যু নয়, বরং হত্যা করা হয়েছে তার ছেলেকে—এমন অভিযোগ তুলে তিনি ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার সুরাহা হয়নি আজও। ছেলের অকাল মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের জন্য এখনও আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী।

সালমান শাহের মৃত্যুর ২৫ বছর পরও রহস্যের জাল এখনও ছিঁড়েনি। তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন, নাকি খুন হয়েছিলেন—এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর আজও খুঁজে চলেছেন সালমান স্বজন-ভক্তরা। যদিও ২০২০ সালে পিবিআইর তদন্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়, সালমানের মৃত্যু হত্যা নয়, আত্মহত্যা।

১৯৯৩ সালে সালমান অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‌‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ মুক্তি পায়। এরপর থেকেই বাংলা চলচ্চিত্রে ভরসার প্রতিশব্দ হয়ে ওঠেন এ নায়ক। ৯০ দশকের শ্রেষ্ঠ নায়ক সালমান মাত্র ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। যার বেশিরভাগই ছিল তুমুল জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল। মাত্র তিন বছরের অভিনয় জীবনে এতটা দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দেওয়ার ইতিহাস বিরল।