এখনও পানিবন্দি চট্টগ্রাম নগরীর হাজার হাজার পরিবার

এখনও পানিবন্দি চট্টগ্রাম নগরীর হাজার হাজার পরিবার। কিছু সড়কে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি। সোমবার (২০ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত সড়কে পানি থাকায় বাসাবাড়ি থেকে বের হতে পারেননি নগরীর বাসিন্দারা। তবে কেউ কেউ নৌকা চালিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন।

নগরীর বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পানিতে যানবাহন আটকে থাকায় নগরজুড়ে সারা দিন ভয়াবহ যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় জ্বলেনি চুলা। এমন পরিস্থিতিতে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বাটালি হিলের অস্থায়ী নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। 

গত শুক্রবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে নগরী ও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে সোমবার নগরীতে তেমন বৃষ্টি না হলেও বৃষ্টির পানির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জোয়ারের পানি। নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন কাতালগঞ্জ এলাকার লোকজনকে নৌকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে দেখা গেছে। কাতালগঞ্জের ১ নম্বর সড়কেও নৌকা চলতে দেখা গেছে।

এদিকে, বহদ্দারহাট ফরিদাপাড়া এলাকার বিভিন্ন কলোনিতে হাঁটুপানি থাকায় বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। চান্দগাঁও থানার খাজা রোড, পুরাতন চান্দগাঁও থানা এলাকা, সিঅ্যান্ডবি, আগ্রাবাদ ছোটপুল, বড়পুল, ব্যাপারিপাড়া, মহুরিপাড়া, সিডিএ আবাসিক এলাকা, আতুরার ডিপো, চকবাজার, বায়েজিদ, ইপিজেড ও পতেঙ্গার নিম্নাঞ্চলে পানি জমে আছে। বিকালে জোয়ারের পানি যুক্ত হয়ে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব এলাকার বেশিরভাগ বাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকেছে।

সোমবার বিকালে চকবাজার ওয়ার্ডের চকবাজার, কাপাসগোলা, বাদুরতলা ও পূর্ব ষোলশহরের বহদ্দারহাট এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ করেছেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

কাতালগঞ্জের ১ নম্বর সড়কেও নৌকা চলতে দেখা গেছে

এ সময় মেয়র বলেন, ‘জলাবদ্ধতা চট্টগ্রাম নগরীর বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহানগর এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কয়েক বছর ধরে কাজ চলছে। মেগা প্রকল্পের জন্য খালে বাঁধ দিয়েছিল সিডিএ। যেগুলোর বেশিরভাগই অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু নিম্নাঞ্চলে এখনও কয়েকটি বাঁধ থেকে গেছে। এ জন্য পানি অপসারণ হচ্ছে না। ফলে বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট হচ্ছে। কাজ শতভাগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতার সমস্যা থাকবে। তবে মেগা প্রকল্পের আওতার বাইরে যেসব খাল ও নালা রয়েছে সেগুলো পরিষ্কার রাখার কাজ সিটি করপোরেশনের লোকজনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে।’

মেয়র বলেন, ‘পাহাড় কাটা বন্ধ না হলে পলি মাটি গিয়ে নালা ও খাল ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। বিশ্বের অনেক বড় বড় শহরে পানি উঠে, আবার তা সরেও যায়। আমরাও তেমনটা চাই। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়েছে। যার কারণে উপকূলীয় শহর হিসেবে জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ জোয়ারের পানি। এটাকেও ব্যবস্থাপনায় আনতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নগরীতে একসময় ৭৬টি খাল ছিল। এখন আছে ৫৭টি। অনেক খাল ভূমিদস্যুরা দখল করেছে। সেগুলো উদ্ধার করা দরকার।’