ওসমানী মেডিক্যালের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, প্রধান আসামি গ্রেফতার

সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি দিব্য সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩ আগস্ট) দিবাগত রাত ১টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শহরতলীর শাহপরাণ এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। গ্রেফতার দিব্য নগরীর কাজলশাহ ৫২ নম্বর বাসার রমনীকান্ত সরকারের ছেলে। সে মহানগর ছাত্রলীগের কর্মী।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) আশরাফ উল্যাহ তাহের। তিনি বলেন, হামলার পর পরই দিব্য আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেফতার এড়াতে একাধিকবার সে স্থান পরিবর্তন করে। পুলিশ সম্ভাব্য কিছু জায়গা নজরদারিতে রেখে বুধবার দিবাগত রাতে দিব্যকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার দিব্য সরকারএরআগে, রবিবার দুপুরে এক রোগীর দুই স্বজনের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমন আহমদের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ওই দুই স্বজনকে পুলিশে সোর্পদ করে চিকিৎসকরা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা হয়। পরদিন সোমবার (১ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমন আহমদ ও ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুদ্র নাথের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আহতাবস্থায় তাদেরকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার রাত ১০টার দিকে ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা জরুরি, হৃদরোগ ও বর্হিবিভাগ ছাড়া হাসপাতালের সব বিভাগে সেবা বন্ধ করে দেন। এছাড়া কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচিও পালন করেন তারা। মেডিক্যাল কলেজের অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে যুক্ত হন। আন্দোলনকারীরা মেডিক্যাল কলেজে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মামলা করাসহ পাঁচ দাবি জানান। 

পরে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহনির অভিযোগে ৮ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ওসমানী হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হানিফ এবং ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের পিএ-টু প্রিন্সিপাল ও সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহমুদুল রশিদ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- দিব্য, আব্দুল্লাহ, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি। আসামিদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।  তাদের মধ্যে নগরীর মুন্সিপাড়ার মৃত রানা আহমদের ছেলে সাঈদ হাসান রাব্বি ও কাজলশাহ এলাকার আব্দুল হান্নানের ছেলে এহসান আহমদকে সোমবার দিবাগত রাতে পুলিশ গ্রেফতার করে। রাব্বি সিলেট মহানগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।