প্রধানমন্ত্রীর কাছে অ্যাম্বুলেন্স ও ডাক্তার চাইলেন চা শ্রমিকরা

সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকার গলফ মাঠ থেকে চা শ্রমিকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে গণভবন থেকে সরাসরি চা শ্রমিকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় চা শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসক চান।  

লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকার গলফ মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহচা মান। মতবিনিময় সভায় নারীদের পক্ষ থেকে চা শ্রমিক শ্যামলী গোয়ালা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি ছাড়া আমাদের কেউ নেই। আপনি আমাদের পিতা-মাতা। আমরা যখন আন্দোলন শুরু করি তখন আমাদের একটাই চাওয়া ছিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটিবার কথা বলবো। সেই সময়ে আপনি নিজ থেকে আমাদের হয়ে কথা বলেন এবং আমাদের মজুরি বাড়িয়ে দেন। এজন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, আমরা চিকিৎসাসহ নানা ভোগান্তিতে রয়েছি। আমরা অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাবো সেই ব্যবস্থা নেই। আমাদের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিন। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য বাগানে একজন এমবিবিএস চিকিৎসকের ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি। এছাড়া তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করার দাবি জানান।

চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা তার বক্তব্যে বলেন, চা শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য চাকরির ক্ষেত্রে আলাদা কোটা ও উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের সুযোগ প্রদান এবং গ্র্যাচুইটি (অনিবার্য কারণে পাঁচ বছর পর চাকরি ছেড়ে দিলে এককালীন ভাতা বা বকশিশ) ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান।

তাদের বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানসহ নাগরিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রীও চা শ্রমিকদের আবেগমাখা বক্তব্য শুনে অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমার তো বাবা-মা কেউ নেই, আপনারাই আমার সব।

সিলেটের অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের এমপি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম, জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ, সিলেট জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিলেট মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন ও জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন- 

এত বড় উপহার আমি আর কখনও পাইনি

চা শ্রমিকরা সবসময় নৌকায় ভোট দেন: প্রধানমন্ত্রী