বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে শেখ হাসিনা পালিয়ে থাকলেও ওই দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ কেউ কিছুই বলে না। এখন শেখ হাসিনা হয়ে গেছে ওসামা বিন লাদেনের (আল-কায়েদা নেতা) খালাতো বোন। লাদেন যেমন বিভিন্ন গুহায় পালিয়ে ভিডিও বার্তা দিতেন, এখন শেখ হাসিনা লাদেনের মতো পালিয়ে থেকে ভিডিও বার্তা দেন।’
বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুর ১২টায় বরিশাল বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মে দিবস উপলক্ষে বরিশাল মহানগর ও জেলা শ্রমিকদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা ২২৭টি মামলার বিষয়ে তিনি বলেছেন ২২৭টি হত্যা নিশ্চিত হলো। গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত হয়েছে এ বার্তাটি ছিল শেখ হাসিনার দেওয়া। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিভাবে বলতে পারেন যারা মামলা দিয়েছে সেই ২২৭ জনের হত্যা নিশ্চিত হলো। তিনি ভারতে বসে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।’
এ সময় রিজভী প্রশ্ন রাখেন, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী কত মানুষ হত্যা করেছেন? এরপরও আপনার রক্তের পিপাসা মেটেনি? রক্তপিপাসু নারীকে আজও পার্শ্ববর্তী দেশে টিকিয়ে রেখেছে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। নির্বাচন নিয়ে কাউকে দিয়ে উসকানি দেওয়া হলে তা মঙ্গলজনক হবে না। ফ্যাসিবাদের উত্থান হলে কেউ বাঁচতে পারবে না।’ সবাইকে ঐক্যের মধ্যে থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে শ্রমিকদের সমাবেশ করতে সংগঠিত হতে দেওয়া হয়নি। তাদেরকে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দেওয়া হয়নি। পরিষেবা আইন করে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের যে অধিকার তা বন্ধ করে দিয়েছিল শেখ হাসিনা। আগস্ট বিপ্লবে শেখ হাসিনার গুলিতে শুধু ছাত্র-জনতা নয়, শ্রমিকদেরও রক্ত দিতে হয়েছে। সেই রক্তে রচিত হয়েছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের মহাবিপ্লব।’
তিনি বলেন, ‘ওই আন্দোলনে শতাধিক শ্রমিক মারা গেছে। ৩০ জন রিকশাচালককে হত্যা করা হয়েছে। শ্রমিকদলের ৭১ জনকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। তাই আজও রক্ত ঝরছে। কিন্তু আমরা তাদের কাউকে মূল্যায়ন করি না। দেশের ক্রান্তিকাল এখনও শেষ হয়নি। শ্রমিকদের আয় প্রতিদিন কমে যাচ্ছে। বিদ্যুতের সংকটে বন্ধ হচ্ছে কারখানা। হাজার হাজার শ্রমিককে ছাটাই করা হয়েছে। শ্রমিকের পরিবারে খাবার নেই, সন্তানকে লেখাপড়া করাতে পারে না। কে দেখবে এদেরকে, যা সারা জাতির প্রশ্ন।’
মহানগর শ্রমিকদলের সভাপতি ফয়েজ আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।