ধর্ষণের ২ মামলায় ও ধর্ষণ চেষ্টায় ৫ আসামির যাবজ্জীবন 

সুনামগঞ্জে দুটি ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলার পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও একলাখ টাকা জরিমানা করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বেলা ১২টায় আসামিদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন খোকন, তাহিরপুর উপজেলার সাহিদাবাদ গ্রামের শফি উল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিউল, ছাতক উপজেলার মোহনপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন। 

এছাড়া আদালত চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামি চালক শহীদ মিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের আগস্ট মাসে বিশ্বম্ভরপুর দীগেন্দ্র বর্মণ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী বাড়ি ফেরার সময় আনোয়ার হোসেন তাকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে তাহিরপুর উপজেলার লাউরেরগড় এলাকায় ধর্ষণ করে। পরে আনোয়ারকে বেঁধে রেখে সাহিদাবাদ গ্রামের শফি উল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিউল ওই তরুণীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারলে করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করে। পরে আদালত চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চার জনকে খালাস দেন। বাকি তিন আসামির নাম তদন্তে প্রমাণিত না হওয়ায় পুলিশের অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়।

এছাড়া ২০১২ সালের ১৭ মার্চ ছাতক উপজেলার মাহনপুর গ্রামের ১৩ বছরের কিশোরীকে রাতে ইকবাল ও জয়নাল আবেদীন অপহরণ করে সিলেটে নিয়ে যায়। সেখানে আসামি ইকবাল হোসেন মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার কিশোরীর চাচা চমক আলী বাদী হয়ে ছাতক থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি ইকবাল হোসেনকে যাবজ্জীবন ও জয়নাল আবেদীনকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। 

অন্যদিকে দিরাই পৌর এলাকার তরুণী সিলেটের লামাকাজীর বোন জামাইয়ের বাড়ি থেকে পাবলিক বাসে করে দিরাই আসার সময় চালক শহিদ মিয়া তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে ওই তরুণী চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় দিরাইয়ে সুশীল সমাজ রাজপথে আন্দোলন করেন। ওই মামলায় বাস চালককে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও কন্ডাক্টর রশিদ আহমদকে খালাস দেন আদালত। 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি নান্টু রায় বলেন, আদালতে বাদী পক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল খালেকের দাবি, তার মক্কেলরা ন্যায়বিচার পাননি। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।