বাস বন্ধ, মোটরসাইকেল বহর নিয়ে সমাবেশে নেতাকর্মীরা

সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশের আগের দিন (শুক্রবার) মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় বাস ধর্মঘট চলছে। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকে এই তিন জেলায় কোনও বাস চলাচল করছে না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বাস ধর্মঘট ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সুনামগঞ্জ থেকে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশের দিকে ছুটছেন। 

সকালে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল বহর নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজারসহ ১২টি উপজেলা থেকে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যাচ্ছেন।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ, উপজেলা থেকে জেলা সদরে আসার সময় চালবন পয়েন্ট চাদনীঘাট, আব্দুজ জহুর সেতু, হাছন তোরণ, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। জাতীয় ও দলীয় পতাকা কাঁধে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। দুপুর ১২টা দিরাই রাস্তার মোড় থেকে একত্রিত হয়ে বিএনপির যাত্রা শুরু করেন তারা।

সুনামগঞ্জ-১

এদিকে যাত্রীবাহী বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধের কারণে সাধারণ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে জরুরি প্রয়োজনে চলাচল করছেন। আজ জেলা শহরের আধিকাংশ দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে। আকস্মিক ধর্মঘটের বিষয় না জানায় যাত্রীরা পড়েন নানান সমস্যায়। বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ থাকলে জেলার প্রধান সড়কে  প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এসব যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। 

সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সামছুজ্জামান বলেন, ‌‘ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন শ্রমিক মালিক আর যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। এতে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন।’

জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান রাজু বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের সমাবেশে যোগদান ঠেকাতে জেলা শহরের প্রবেশের প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ অবস্থান নিয়ে বাধা দিচ্ছে। সরকার জোর করে পরিবহন শ্রমিক মালিকদের বাধ্য করেছে বাস মিনিবাস চলাচল বন্ধ করতে।’

জেলা কৃষক দলের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসুল হক বলেন, ‘গতরাত থেকে পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের ঠেকাতে পয়েন্টে পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। আজ দুপুরের জনস্রোতের তোড়ে পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের আটকে রাখতে পারেনি। জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে নৌকায় মোটরসাইকেল ও হেঁটে হাজার হাজার নেতাকর্মী সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থান নিয়েছেন। ’

দোয়াবাজার উপজেলা শহরে সালমা খাতুন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সাধারণ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে।  এভাবে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে মানুষকে আরও বিপদে ফেলা হয়েছে।’

দিরাই উপজেলার বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘বাস চলাচল বন্ধের কারণে ভাড়া দ্বিগুণ তিনগুণ গুনতে হচ্ছে।’

সুনামগঞ্জ-২

গোবিনপুর গ্রামের সালু মিয়া বলেন, ‘একে তো গণসমাবেশ অন্যদিকে বাস মিনিবাস চলাচল বন্ধের কারণে সরকার ও পরিবহন শ্রমিক মালিকরা সাধারণ মানুষের প্রতি অন্যায় করছে।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল বলেন, ‘সরকারের পেটোয়া বাহিনী পুলিশ এখন ছাত্রলীগের ভূমিকা পালন করছে। সড়কের প্রতিটি পয়েন্টে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাধা দিচ্ছে। শহরে প্রবেশের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, পুলিশ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবস্থান নিয়েছে। কোথাও কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণের শান্তি নষ্ট করলে কাউকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।