শিক্ষিকার সঙ্গে ‘ঢাকা মার্ট’ অনলাইন শপের প্রতারণার অভিযোগ

অনলাইন শপ ‘ঢাকা মার্ট’ থেকে সাড়ে ২৫ হাজার টাকার আটটি শাড়ি কিনে ঠকেছেন সিলেটের এক কলেজশিক্ষিকা। ঢাকা থেকে পরিচালিত অনলাইনভিত্তিক এই শপের বিজ্ঞাপন দেখে কলেজশিক্ষিকা লেমন কালারের আটটি শাড়ি অর্ডার করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ভিন্ন কালার ও নিম্নমানের আটটি শাড়ি কুরিয়ারের মাধ্যমে তার কাছে পাঠায় ‘ঢাকা মার্ট’। পরবর্তীতে একাধিকবার ‘ঢাকা মার্ট’র সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে কলেজশিক্ষিকা বিষয়টি তাদের জানালেও কোনও সমাধান দেয়নি তারা। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কলেজশিক্ষিকা মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০ নভেম্বর ‘ঢাকা মার্ট’ অনলাইন শপ থেকে ২৫ হাজার ৬০০ টাকায় আটটি শাড়ি অর্ডার করেন কলেজশিক্ষিকা। অর্ডারের দিন একটি বিকাশ নম্বরে অগ্রিম দুই হাজার টাকা পাঠান। পরদিন ২১ নভেম্বর ঢাকা মার্ট সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তার অর্ডারকৃত আটটি শাড়ি পাঠায়। ওই দিনই তিনি শাড়িগুলো গ্রহণ করেন এবং বাকি ২৩ হাজার ৬০০ টাকা কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠান। কিন্তু বাসায় এসে কাপড়ের প্যাকেট খুলে দেখেন, ঢাকা মার্ট তাদের ফেসবুক পেজে যে লেমন কালারের সিল্কের শাড়ির বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, প্রেরিত শাড়িগুলো লেমন কালার ও  পিওর সিল্কের নয়। শাড়িগুলো হলুদ ও নিম্নমানের।

তাৎক্ষণিক ওই কলেজশিক্ষিকা ‘ঢাকা মার্ট’র ফেসবুক পেজের ইনবক্সে বার্তা দিয়ে প্রাপ্ত শাড়ির ছবি পাঠিয়ে বিষয়টি জানান। এ সময় তারা ভিন্ন একটি মোবাইল ফোন দিয়ে শাড়িগুলোর ছবি দ্বিতীয়বার তুলে পাঠাতে বলেন। তাদের কথামতো কলেজশিক্ষিকা ভিন্ন একটি মোবাইল থেকে প্রাপ্ত শাড়িগুলোর ছবি ও অর্ডারের সময় রাখা শাড়ির ছবির স্ক্রিনশট মেসেঞ্জারে দিয়ে তারতম্য বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এরপর ঢাকা মার্ট কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে নানা টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে তাদের কাস্টমার কেয়ার ডেস্কের মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিলে তারা কোনও সহযোগিতা করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এমনকি তারা ফেসবুকে মেসেজের মাধ্যমে সর্বশেষ ওই শিক্ষিকাকে জানায়, যে শাড়িগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলোই ঠিক। তাদের আর কিছু করার নেই।

তখন কলেজশিক্ষিকা ঢাকা মার্টকে অনুরোধ করে আবারও বলেন, ‘এগুলো ফেরত নিয়ে আমাকে ওই টাকার মধ্যে অন্য ডিজাইনের শাড়ি দিয়ে দিন। কারণ এই শাড়িগুলো আমি আত্মীয়দের উপহার দেবো। অর্ডার অনুযায়ী শাড়ি দেওয়া হয়নি তাই আমি বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি।’ 

এরপরও ঢাকা মার্ট কর্তৃপক্ষ তার কথা রাখেনি। সেইসঙ্গে কলেজশিক্ষিকার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার কেয়ার ডেস্কের এক কর্মকর্তা।

অভিযোগের বিষয়ে ফেসবুক পেজে দেওয়া ঢাকা মার্টের মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তুষার নামে একজন নিজেকে প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার কেয়ার ডেস্ক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমরা কোনও ভুল করিনি। অর্ডার অনুযায়ী পণ্য দিয়েছি।’

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সিলেট বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তসাপেক্ষে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো আমরা।’