অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে না পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা-গাড়িতে অগ্নিসংযোগ

সিলেটের জৈন্তাপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চার ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা, ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ ও চালক না থাকায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ায় শনিবার (২০ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে দফায় দফায় হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত।

হামলাকারীরা হাসপাতালের ভেতরে পার্কিং করে রাখা সরকারি জিপে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর ও দায়িত্বরত চিকিৎসকদের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি গাড়ির প্রায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সিলেটের জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, চার ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যুর পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। কারা এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। থানায় অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘হামলা চলাকালে হাসপাতালে রাখা একটি সরকারি জিপে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকদের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় মামলা করা হবে।’

তিনি জানান, ঘটনার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজনকে নিয়ে আসার পরপরই চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদের ইসিজিও করা হয়েছিল। পরে তাদের সিলেটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। এ সময় হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালকের পদ শূন্য ছিল। এ জন্য দেওয়া যায়নি। এতেই হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুরের ৪ নম্বর বাংলাবাজার রাংপানি এলাকায় প্রাইভেটকারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেলে দুর্ঘটনায় চার ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হন।

নিহতরা হলেন, জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট লামাপাড়া গ্রামের জহুরুল মিয়ার ছেলে জুবায়ের আহসান (২৬), নিজপাট তোয়াসীহাটি গ্রামের রণদ্বীপ পালের ছেলে নেহাল পাল রিসব (২৫), নিজপাট পানিহারাহাটি গ্রামের আরজু মিয়ার ছেলে মেহেদী হোসেন তমাল (২৪) ও নিজপাট জাঙ্গালহাটি গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে সুমন আহমদ (২৫) ৷

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, ‘তারা তামাবিল স্থলবন্দর যাচ্ছিলেন। ৪ নম্বর বাংলাবাজার এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারটি ব্রিজের নিচে খাদে পড়ে যায়।’

ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মারা যাওয়া যুবকদের পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে ৩ জনের দাফন ও নেহাল নামের আরেকজনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় শনিবার দুপুর ২টার দিকে।’