হলের দাবিতে রবিবার জবিতে আবারও ধর্মঘট

আবাসিক হল নির্মানের জমির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ক্যাম্পাসে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘট পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন থেকে আগামী রবিবার আবারও ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনও বিভাগেই ক্লাস ও পরীক্ষা হয়নি।

বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে ছাত্র ধর্মঘট পালনের পর বেলা ১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে শাহেদ ইসলাম বাদল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘হল আমাদের প্রাণের দাবি। আমরা হল চাই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আগামী রবিবার আবারও সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘট পালন করব। হলের বিষয়ে রবিবারও সরকার বা প্রশাসনের কাছ থেকে  সুস্পষ্ট কোনও আশ্বাস না পেলে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাবো।’

এর আগে সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয় কয়েকহাজার শিক্ষার্থী। প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা বন্ধ করে সেখানে টায়ার জালিয়ে মিছিল করে তারা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে পরে তারা বাহাদুর শাহ পার্ক ও আদালত এলাকার রাস্তায় অবস্থান নেয়। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদেরকে বলেন, প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির এখনও পর্যন্ত একটি ছাত্রের জন্যও আবাসিক সুবিধা দিতে পারেনি। ছাত্রীদের জন্য একটি হল নির্মানের কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে কিন্তু এখনও তা একতলাও তুলতে পারেনি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেন, হল নির্মাণের কোনোও জায়গা নেই। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গাটি জবিকে দেওয়া হোক।

প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিত্যক্ত কারাগারের জমি পেতে ২০১৪ সালের মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে আবেদন করেছিল। এবার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জমিটির জন্য গত ১৪ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আবেদন করা হয়েছে বলে উপাচার্য মীজানুর রহমান জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও কোনও সাড়া মেলেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদেরকে বারবার অনুরোধ করছি তারা যেনও কোনও ধরনের সহিংসতার পর্যায়ে না যায়। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করুক, ক্লাস-পরীক্ষাও চলুক। আমরা হলের জমির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

২০০৫ সালে অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি হল প্রভাবশালীদের দখলে থাকার পর ২০১৩ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ৩টি হল উদ্ধার হয়। তবে বাকি ৯টি হল এখনও বেদখলেই রয়ে গিয়েছে।

/আরএআর/এনএস/