গবেষণায় জোর দেওয়ার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, উন্নত জীবনযাপনের জন্য গবেষণার বিকল্প নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে, অনুকরণ নয়, উদ্ভাবনই আমাদের শক্তি। উদ্ভাবনের জন্য শিশুকাল থেকেই নিজেদের গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে। কারণ, গবেষণা হঠাৎ করে হয় না, একটা সংস্কৃতি তৈরি করতে হয় চর্চার মধ্য দিয়ে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণায় জোর দেবে এটা আমি বিশ্বাস করি। সরকার এক্ষেত্রে অনেক বরাদ্দও দিচ্ছে।

সোমবার (২৯ নভেম্বর) বিকালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) ষষ্ঠ সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ইউল্যাবের সমাবর্তন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেই উদ্যোগ এখনও নিচ্ছে না। সেই কারণেই হয়তো আমরা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে গবেষণাকে নিয়ে যেতে পারিনি। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় আমাদের রূপকল্প হচ্ছে ২০৪১ সালে উন্নত দেশের আসনে আসীন হওয়া এবং আমাদের ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ সালে বাস্তবায়ন করা। এজন্যই আমাদের গবেষণানির্ভর সমাজ তৈরি করতে হবে।   

বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণি

ডা. দীপু মনি  বলেন, করোনায় আমরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তবে প্রযুক্তির সহায়তায় এবং শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা এগিয়ে চলছি। ইউজিসি চেষ্টা করেছে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিনা সুদে ঋণ পায়। আমরা এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে বলছি একটি রিভলভিং ফান্ড তারা যেন রাখেন। যখনই শিক্ষার্থীরা আসবে, যাদেরই প্রয়োজন হবে, যাদের ডিভাইস লাগবে তারা যেন সহজ শর্তে বিনা সুদে এখান থেকে ঋণ নিতে পারে। সবার প্রচেষ্টায় করোনা অতিমারির মধ্যেও আমাদের থেমে যেতে হয়নি। শিক্ষা ব্যবস্থাকে চালু রাখতে পেরেছি। শিক্ষা খাতে আমরা ২০০৮ সালের আগে পিছিয়ে ছিলাম। কিন্তু গত ১০ বছরে শিক্ষা খাতে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারি-বেসরকারি উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ভালো শিক্ষক ও গবেষক আছেন। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যদি একসঙ্গে কাজ করে, নিজেদের মধ্যে আদান প্রদান করতে পারে, তাহলে নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি হবে। শিক্ষায় বিনিয়োগ সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাকে অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন। দিন দিন শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে সরকার। আমরা আমাদের সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার সাহস অর্জন করেছি। আমরা এখন কারও দিকে তাকিয়ে নেই। বরং আমরাই বহু প্রতিবেশী দেশের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি। 

দীপু মনি বলেন, ইউল্যাব একটি ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে একজন শিক্ষার্থীকে বিশেষায়িত বিষয়গুলোর পাশাপাশি বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, বাংলাদেশ স্টাডিজ, ইংরেজি ভাষা, বিশ্বসভ্যতা, দর্শন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হয়। ফলশ্রুতিতে তারা সমাজ-সচেতন সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ পায়। পূর্ণাঙ্গ মানুষ গড়ার এই ধারণা সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারায় আমি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।

সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা। সমাবর্তনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ায়ি যুক্ত ছিলেন ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সহ-সভাপতি কাজী আনিস আহমেদ।

সমাবর্তনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান, উপ- উপাচার্য অধ্যাপক সামসাদ মর্তুজা, রেজিস্ট্রার লে. কর্নেল (অব.) ফয়জুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিলন কুমার ভট্টাচার্যসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।