সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষকদের হেনস্তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান

ধর্ম অবমাননার অজুহাতে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষকদের হেনস্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলে অপকর্মকারীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একইসঙ্গে এই ধরনের অপকর্ম যারা করছেন,তাদের চিহ্নিত করারও আহ্বান জানান তিনি।

বুধবার (৬ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান তিনি। 

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘নীতিমালা করে কোনও পেশাজীবী বা শিক্ষকদের নিরাপত্তার দেওয়া যায় বলে আমার মনে হয় না। এ ধরনের যেকোনও হামলার বিচারের জন্য আইন আছে, আইনে ফাঁক-ফোকরও নেই। আমাদের চেষ্টা করতে হবে— সবার মাঝে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা। কোনও একটা কিছু হলেই ধর্মের নামে উন্মাদনা তৈরি করে যে কাউকে হামলা করা— এটা কতটা ভয়ংকর, তা আমাদের চিন্তা করতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের এটি ভাবা উচিত।  আজ  আমার ওপর হামলা হয়নি, কাজেই এটা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই— এই কথাটা যেন কেউ না ভাবে। এই রকম একটি অবস্থা যদি কোনও মহল সৃষ্টি করে, তাহলে দেশের সবাইকেই কোনও না কোনও সময় ছুঁয়ে যেতে পারে, যদি আমরা সচেতন না হই। এই অপকর্ম যারা করছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে, তাদের প্রতিহত করতে হবে।’

হিন্দু শিক্ষকদের ওপরে হামলা পরিকল্পিত উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মাস তিনেক থেকে ধারাবাহিকভাবে এটি শুরু হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে শিক্ষাক্রম থেকে ধর্ম শিক্ষা বাদ দেওয়া হয়েছে বলে প্রচারণা করা হচ্ছে।  অপরদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষকদের পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হচ্ছে ছক অনুযায়ী। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে— আমরা সমাজটাকে কেমন চাই। সমাজে সহনশীলতা কমেছে। এর নানা কারণ আছে। বৈশ্বিক কারণ আছে, আমাদের রাজনৈতিক কারণ আছে, অর্থনৈতিক কারণ আছে, সামাজিক কারণ আছে।  কিন্তু এই সমস্যাগুলোর মূলে যেটা— ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করে উসকানি দিয়ে অসহিষ্ণু পরিবেশ তৈরি করা। সেই জায়গায় আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলবে হবে। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু। কিন্তু আমাদের ধর্মান্ধতার দিকে কারা ঠেলে দিচ্ছে, সেই জায়গাগুলোতে আমাদের সচেতন হতে হবে। একটা সামাজিক পরিবর্তন আনতে হলে সমাজের সবাকেই সচেতন হতে হবে।’

মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার পদ্ধতির মধ্যদিয়ে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। এতে সুদূরপ্রসারী ফল আমরা পাবো। কিন্তু আজকেই সেটা (সামাজিক প্রতিরোধ) ঘটে যাবে না।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যদি মিথ্যাচার হয়, তার বিরুদ্ধেও লিখতে হবে। প্রতিরোধ করতে হবে।  কিন্তু আমরা কি সবাই প্রতিবাদ করছি? যখন এই মিথ্যাচারগুলো হচ্ছে তখন কয়জন মানুষ বলছে যে, এটি মিথ্যাচার? আপনার-আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টেই কেউ মিথ্যাচার করছে। কিন্তু আমরা কি তার প্রতিবাদ করছি, কতজন করছি?’শিক্ষামন্ত্রী