‘বিশ্বমানের নাগরিক হতে হলে নিজ ভাষা শিখতে হবে’

সাবেক সচিব কবি আসাদ মান্নান বলেছেন, আমি মনে করি, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তিনি যে বিষয়েরই হন না কেন, তাকে তো মোটামুটি একটা বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে৷ সেক্ষেত্রে নিজ ভাষাকে শিখতে হবে, সাহিত্যকে ধারণ করতে হবে।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের সহযোগিতায় ‘বাংলায় স্নাতক: ক্যারিয়ার সম্ভাবনা’ শীর্ষক বৈঠকিতে তিনি এ কথা বলেন।

আসাদ মান্নান বলেন, বাংলা, ইংরেজি বা জার্মান যে সাহিত্যই হোক না কেন, সেটার ভাষা ভিন্ন হলেও অন্তর্গত রূপ প্রকৃতি অভিন্ন৷ মানুষের আনন্দ, লড়াই, সংগ্রাম সবকিছুকে ধারণ করে সাহিত্য৷ আর এই সাহিত্য সৃষ্টি করে থাকেন লেখক এবং সৃজনশীল ব্যক্তিরা।

প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য প্রয়োজন হয় প্রজ্ঞার, আর কর্মমুখী দক্ষতার জন্য স্কিল। আর এই প্রজ্ঞা নিজ ভাষার দক্ষতা থেকে আসে মন্তব্য করে সাবেক এই সচিব বলেন, আমাদের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য মানুষ তৈরি করা, মানুষের সভ্যতাকে আরও সমৃদ্ধ করা। আলোকিত মানুষ তৈরি করা। তা না করে আমরা কিছু কর্মজীবী মানুষ তৈরি করছি, কর্মী বানানোর জন্য শিক্ষাটাকে ব্যবহার করছি। আজকের শিক্ষাটা যদি আলোকিত মানুষ তৈরি করার জন্য হতো, তাহলে আমি মনে করি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কোনও না কোনোভাবে হয়ে যেতো।

বৈঠকিতে আরও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক তুলনামূলক সাহিত্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক শামীম রেজা। তিনি বলেন, এখন বাংলা ভাষা শিক্ষা নিয়ে সবার মাঝে চিন্তার পরিবর্তন এসেছে। বাংলা শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিরা আমাদের ক্যাডার-ভিত্তিক যে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড, সেখানে দক্ষতার সঙ্গে তাদের সফলতার ছাপ রেখেন। এখন ইংরেজিটা যেমন দরকার তেমন বাংলাও দরকার।

প্রথমবারের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইউল্যাবে বাংলা বিভাগ চালু হচ্ছে। এই বিভাগের শিক্ষাক্রম তুলে ধরে বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, আমরা বাংলা বিভাগের টিউশন ফি কমিয়ে দিয়েছি। এছাড়া পেশাগত কার্যক্রমে বিশেষ করে সাংবাদিকতা ও দেশীয় ঐতিহ্য, ক্ষুদ্র- নৃজাতি গোষ্ঠীর ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার যে সম্পর্ক রয়েছে, তা শেখানো ও অনুবাদ সাহিত্য এগুলো আমাদের সিলেবাসের মধ্যে আছে।

বৈঠকিতে সাংবাদিক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের আসাম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য।