কেরানি নয়, দক্ষ ও স্মার্ট নাগরিক তৈরি করবে নতুন শিক্ষাক্রম: শিক্ষামন্ত্রী

কেরানি নয়, দক্ষ ও স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সোমবার (১৫ মে) ঢাকা সরকারি টিচার ট্রেনিং কলেজে ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২৩’ -এর জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন— ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থায় শিক্ষা ব্যবস্থা হলো কেরানি তৈরির শিক্ষা ব্যবস্থা। স্বাধীন দেশের নাগরিকদের জন্য সেটি নয়। কেরানি তৈরির শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে প্রতিটি মানুষের সৃজনশীলতার পরিপূর্ণ বিকাশ অনেক সীমিত করে। কাজেই আমরা এখন বঙ্গবন্ধুর দেখানো সেই পথে শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা আমূল পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি। বঙ্গবন্ধু ‘ড. কুদরৎ-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন’ গঠন করেছিলেন। সেই সময়ে কমিশন একটি শিক্ষা নীতি তৈরি করেছিল। তবে সেই নীতিটি বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি জাতির পিতা। ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আরেকটি শিক্ষা নীতি করেছি, সেটি ড. কুদরৎ-ই-খুদা কমিশনের সেই শিক্ষানীতি অনুসরণ করেই।‘

শিক্ষাকে এখন রূপান্তর ঘটিয়ে যে জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, সেই রূপান্তর ঘটানোর জন্য নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্ব এখন শিক্ষায় রূপান্তর ঘটিয়ে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরির চেষ্টা করছে, বাংলাদেশ সেখানে অগ্রগামী অবস্থানে। আমরা ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন শুরু করে দিতে পেরেছি। এ বছর মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এবং প্রাথমিকে প্রথম শ্রেণিতে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আমরা প্রাক-প্রাথমিক থেকে পুরো শিক্ষাক্রমটি বাস্তবায়ন করবো। নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সৃজনশীলতার চর্চা করতে শিখবে। এর মধ্য দিয়ে আমরা দক্ষ ও স্মার্ট নাগরিক আমরা তৈরি করতে পারবো।’

দীপু মনি বলেন, ‘আগের সেই ব্যবস্থায় একটি কারখানা থেকে যেন একই রকম মানুষ তৈরি হচ্ছিল। নতুন এই শিক্ষাক্রমে যেই শিক্ষার্থীর যেদিকে মেধা আছে, সৃজনশীলতা আছে; সেই শিক্ষার্থীকে সেদিকে আরেকটু যত্ন নিয়ে পুরোপুরি বিকশিত করার সুযোগ আছে। আমাদের জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবো, এ দেশটিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো।’

‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২৩’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২৩ এ সারা দেশের আটটি বিভাগ এবং মহানগরী থেকে ১৩৫ জন শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী আজ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বয়সভিত্তিক পাঁচটি ক্যাটাগরির প্রত্যেকটিতে তিন জন করে ১৫ জন সেরা মেধাবী নির্বাচিত হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। অনুষ্ঠানে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।