স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা আবদুল জব্বারকে সমাহিত করা হলো মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় ছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা। এখানে মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ বেতারের শিল্পীরা।
দরাজ কণ্ঠের শিল্পী আবদুল জব্বার বুধবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি, হৃৎপিন্ড, প্রস্টেটসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগেছেন তিনি।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন আবদুল জব্বার। হারমোনিয়াম কাঁধে কলকাতায় বাংলাদেশি শিবির ও মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পগুলোতে গান শুনিয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন মানুষকে। তাঁর গানে অনুপ্রাণিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন অনেকেই। এছাড়া প্রখ্যাত ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন তিনি।
১৯৩৮ সালে ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মেছিলেন আবদুল জব্বার। ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাইতে শুরু করেন তিনি। ১৯৬২ সালে চলচ্চিত্রে প্রথম গান গাওয়ার সুযোগ আসে তার কাছে। ১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম রঙিন ছবি ‘সংগম’-এর গানে কণ্ঠ দেন। একই বছর থেকে তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে নিয়মিত গাইতেন তিনি।
সংগীত জীবনে ছয় হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন আবদুল জব্বার। এর মধ্যে কালজয়ী হয়ে আছে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘তুমি কি দেখেছো কভু জীবনের পরাজয়’, ‘এক বুক জ্বালা নিয়ে বন্ধু তুমি’, ‘পীচঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’, ‘বন্ধু তুমি শত্রু তুমি’ প্রভৃতি। বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), একুশে পদক (১৯৮০) ও স্বাধীনতা পদকসহ (১৯৯৬) অনেক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।