সঞ্জীব চৌধুরী: প্রস্থানের ১০ বছর...

সঞ্জীব চৌধুরীবুক জুড়ে এই বেজান শহর/ হা হা শূন্য আকাশ কাঁপাও/ আকাশ ঘিরে শঙ্খচিলের শরীর চেরা কান্না থামাও/ সমুদ্র কি তোমার ছেলে/ আদর দিয়ে চোখে মাখাও- এমন অনবদ্য অনেক কথা ও গানের জন্ম হয়েছে ক্ষণজন্মা সাংবাদিক-সংগীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরীর মাধ্যমে।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ২০০৭ সালের ১৯ নভেম্বর প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১০ মিনিটে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। আজ তার চলে যাওয়ার ১০ বছর পূর্ণ হলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা সঞ্জীব চৌধুরী আশির দশকে সাংবাদিকতা শুরু করেন। আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ ও যায়যায়দিনসহ বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। সর্বশেষ কাজ করেছিলেন যায়যায়দিনের ফিচার সম্পাদক হিসেবে। তার হাত ধরেই মূলত দৈনিক পত্রিকায় ফিচার বিভাগের শুরু হয়।  
স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে সঞ্জীব চৌধুরীসাংবাদিকতার পাশাপাশি শুরুর দিকে ‘শঙ্খচিল’ নামের একটি দলে সংগীতচর্চাও করতেন। এরপর ১৯৯৬ সালে সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে গড়ে তোলেন ব্যান্ড ‘দলছুট’। সঞ্জীব চৌধুরী ও বাপ্পার যৌথ উদ্যোগে এই ব্যান্ডের অ্যালবামগুলো হলো- আহ্ (১৯৯৭), হৃদয়পুর (২০০০), আকাশচুরি (২০০২) এবং জোছনা বিহার (২০০৭)।
পাহাড়ে সঞ্জীব চৌধুরী
সঞ্জীব চৌধুরীর  সুর ও গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে আছে- ‘বায়স্কোপ’, ‘আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল চাঁদ’, ‘আমি তোমাকে বলে দিব’, ‘রিকশা’, ‘কথা বলব না’, ‘সাদা ময়লা রঙ্গিলা পালে আউলা বাতাস খেলে’, ‘চোখ’, ‘তখন ছিল ভীষণ অন্ধকার’, ‘আহ ইয়াসমিন’ প্রভৃতি।
বাউল শাহ আবদুল করিমের ‘গাড়ি চলে না’ এবং ‘কোন মেস্তরি বানাইয়াছে নাও’ গান দুটি কণ্ঠে তুলেও তিনি বেশ প্রশংসিত হন।
পাহাড়ে সঞ্জীব চৌধুরীসঞ্জীব চৌধুরী ২৫ ডিসেম্বর ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। এরপর ঢাকার বকশী বাজার নবকুমার ইন্সটিটিউটে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এখান থেকে ১৯৭৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১২তম স্থান অর্জন করেন।
সঞ্জীব চৌধুরীর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকীকে স্মরণ করে তেমন কোনও অনুষ্ঠানের খবর পাওয়া যায়নি।

সঞ্জীবের গান: