শুক্রবার দেশে আসছে আমজাদ হোসেনের মরদেহ

গত ১৪ ডিসেম্বর নন্দিত চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে মারা যান। কিন্তু দেশটির সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ঢাকায় মরদেহ আনতে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। অবশেষে সব দাফতরিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
আগামী শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) মরদেহটি দেশে আসবে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এসএ হক অলিক।
আমজাদ হোসেন পরিবারের এই ঘনিষ্ঠজন নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
আমজাদ হোসেন১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জটিলতা যেগুলো তৈরি হয়েছিল তার সমাধান হয়েছে। বাকি অল্প কিছু কাজ শেষ করে ২১ ডিসেম্বর মরদেহ দেশে আনা হবে।’
তিনি আরও জানান, বাকি কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন হলে আগামীকাল রাতেও (২০ ডিসেম্বর) মরদেহ দেশে আনা সম্ভব হতে পারে। তবে ২১ তারিখেই আনার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমজাদ হোসেনের শেষ ঠিকানা হচ্ছে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে।
১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই নির্মাতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্রকারকে ২৭ নভেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। এর আগে ১৮ নভেম্বর সকালে নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন আমজাদ হোসেন। পরে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭৬ বছর বয়সী এই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব নানা ধরনের কাজের জন্য সমাদৃত। একাধারে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনা, প্রযোজনা, অভিনেতা, গীতিকার ও সাহিত্যিক হিসেবে কাজ করছেন।
গুণী এই পরিচালক ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া শিশুসাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, স্বাধীনতা পদকসহ একাধিক রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
আমজাদ হোসেন ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন।
তার নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমণি’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ প্রভৃতি।