সকাল সাড়ে ১০টায় উৎসব উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এফডিসি’র ঝরনা স্পটের সামনে বেলুন ও পায়রা ওড়ানোর মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন আয়োজনের পর্দা ওঠে। উদ্বোধনের সময় তথ্যমন্ত্রীসহ উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ হাসান ইমাম, ড. ইনামুল হক, আলমগীর, ইলিয়াস কাঞ্চন, অঞ্জনা, রোজিনা, শাহনূর, সুব্রত, সম্রাট, আইরিন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক, এফডিসি’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথ, পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘চলচ্চিত্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদে বিল উত্থাপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেন চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন। সে সময় যদি তিনি চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠা না করতেন তাহলে আমাদের দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু হতো না। আমাদের দেশে সে সময় যেভাবে কলকাতার ছবি, হিন্দি ছবি এবং পশ্চিম পাকিস্তানের উর্দু ছবির বাজার তৈরি হয়েছিল সেটির ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশে আর চলচ্চিত্র শিল্প গড়ে উঠতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি চলচ্চিত্র সমাজের ক্যানভাস পরিবর্তন করে দিতে পারে। একটি চলচ্চিত্র মানুষকে কাঁদায়, মানুষকে হাসায়। সমগ্র বিশ্বে চলচ্চিত্র শিল্পের কোনও বিকল্প নেই। চলচ্চিত্রশিল্পের বিকল্প টেলিভিশন নয়, নেটফ্লিক্সে সিনেমা দেখা নয়, ইউটিউবে কোনও সিনেমা দেখা নয়। চলচ্চিত্রের বিকল্প চলচ্চিত্র, অন্য কিছু হতে পারে না। একসময় চলচ্চিত্র শিল্পের স্বর্ণযুগ ছিল। মঞ্চে আজ যারা বসে আছেন তারা সকলে স্বর্ণযুগের শিল্পী। তখন প্রতি সপ্তাহে দুটি করেও ছবি মুক্তি পেত। বছরে ১২০টির বেশি সিনেমা মুক্তি পেত, যা এখন নেই। কেন নেই? সেটির অনেক উত্তর আছে। আমি মনে করি আমাদের সবার সম্মিলিত দায়বদ্ধতা রয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সম্মিলিত দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে চলচ্চিত্রকে আবার সেই স্বর্ণযুগে নিয়ে যাওয়ার জন্য, মানুষকে সুস্থ বিনোদন দেওয়ার জন্য, মানুষকে হলমুখী করার জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এজন্য এরইমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এই যে এফডিসি চত্বর ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত, আধুনিক ঢাকা শহরের সাথে এই চত্বরের মিল একটু কম। সেজন্য আমরা এফডিসিকে আধুনিকায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এছাড়া আমরা এফডিসিতে ৩২২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছি। যেখানে শুধু এফডিসির অফিসগুলো থাকবে তা নয়, সেখানে আধুনিক সিনেমা হল থাকবে, সেখানে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট নানা অফিস থাকবে। এই ভবনটি নির্মাণ হলে এফডিসি লাভবান হবে এবং এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’